নিজস্ব ও ঢামেক প্রতিবেদক ; গুলশানে অভিযান চলাকালে ভবন থেকে লাফিয়ে ফারজানা বেগম (১৮) নামের এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় রিয়া আক্তার (২৭) নামের আরেকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ফারজানার স্বামী জাহিদ হাসান বলেন, সংবাদ শুনে হাসপাতালে এসেছেন তিনি। দুই বছর আগে তিনি ফারজানাকে বিয়ে করেন। তারা খিলক্ষেত বটতলা এলাকায় ভাড়া থাকেন। তাদের গ্রামের বাড়ি খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলার বালিয়া ডাঙ্গায়।
জাহিদ আরও বলেন, তার স্ত্রী ও স্ত্রীর বড় বোন আফসানা গুলশানের কোনো একটি পারলারে কাজের উদ্দেশ্যে বুধবার বেলা আনুমানিক ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হন। পরে তিনি সংবাদ পান যে, ফারজানা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। আর তার বড় বোন আফসানা থানায় আটক আছেন।
ওই দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর বলেন, ‘গুলশান ২ নম্বর এর ৪৭ নম্বর রোডে একটি ভবনে অভিযান চলে, এতে তারা লাফিয়ে পরে গুরুতর আহত হয়। পরে আমাদের মাধ্যমে তাদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। আমরা শুধু নিয়ে এসেছি।’
এসআই আলমগীর বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ফারজানাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আরেকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। ফারজানার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে অভিযানে অংশ নেওয়া এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গুলশান-২ এর ৪৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর ভবনে স্পা সেন্টারের সামনে এসে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি থামলে পাশ থেকে এক ব্যক্তি বলেন, এই ভবনের নামে তো অভিযোগ আছে। তখন ম্যাজিস্ট্রেটের বহর থেকে দুজন পুলিশ সদস্যকে ওই ভবনে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, সব ফ্লোরে গিয়ে নিয়মিত ট্রেড লাইসেন্স ও ভ্যাট দিচ্ছে কিনা জিজ্ঞাসা করেন। কিন্তু ওই ভবনের চার তলায় গিয়ে দরজা খুলতে বললেও তারা খুলেননি। এতে সন্দেহ হলে তারা নিচে থাকা অন্য সদস্যদের ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে অন্য পুলিশ সদস্যসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে গেলে চার-পাঁচ মিনিট পরে তারা দরজা খুলে দেয়। ভেতরে গিয়ে সাতজন মেয়ে ও তিনজন ছেলেকে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসা করলে তারা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ সময় হঠাৎ নিচ থেকে দুজন ওপরে ওঠে জানায়, রাস্তায় দুটি মেয়ে পড়ে আছে। তাড়াতাড়ি তাদের উদ্ধার করে সিটি করপোরেশনের গাড়িতে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, ওই ভবনে ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ সদস্যদের প্রবেশ করতে দেখেই দুই তরুণী ভয় পেয়ে ভবনের ছাদে উঠে নিচে লাফ দেয়। বাকিদের আটক করে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এরমধ্যে ছয়জন মেয়ে ও তিনজন ছেলে রয়েছে। এ ঘটনায় গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হবে।
অভিযানের বিষয়ে জানতে উত্তর সিটির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসানকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
Comment here