গ্যাস লাইনের উপরেই মসজিদের বর্ধিত অংশ নির্মাণ, র‌্যাপিং নষ্ট করায় লিকেজ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

গ্যাস লাইনের উপরেই মসজিদের বর্ধিত অংশ নির্মাণ, র‌্যাপিং নষ্ট করায় লিকেজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বাইতুস সালাত জামে মসজিদের বর্ধিত একটি অংশের নিচে তিতাস গ্যাসের লাইন পাওয়া গেছে। মূলত ওই বর্ধিত অংশ করতে গিয়ে মাটির নিচে থাকা তিতাস গ্যাসের সঞ্চালন পাইপটির র‌্যাপিং নষ্ট করে ফেলা হয়। ফলে, তখন মাটির সঙ্গে পাইপ সংস্পর্শে এসে ছিদ্র হয়েছে এবং গ্যাস বের হয়েছে। ওই জায়গায় পাশাপাশি ছয়টি ছিদ্র পাওয়া গেছে।

আজ বুধবার রাত ৮টায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মাটির নিচে গ্যাসের সম্ভাব্য উৎস অনুসন্ধানে শ্রমিকদের দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি সমাপ্ত করে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। ওই ব্রিফিংয়ে এসব জানান তিতাসের তদন্ত কমিটির আহবায়ক ঢাকা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্লানিং) আবদুল ওয়াহাব তালুকদার। তিনি আরও জানান, জমে থাকা গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে তিতাস গ্যাস।

এর আগে ৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৯টায় পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় স্থানীয়রা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন। অভিযোগ করেন, তিতাস গ্যাসের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ হয়। পরে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

 

তদন্ত কমিটি গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে বিস্ফোরণের ঘটনায় মাটির নিচে গ্যাসের সম্ভাব্য উৎস অনুসন্ধানে শ্রমিকদের দিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করে। আজ রাত ৮টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই খোঁড়াখুঁড়ি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।

পরে বিফ্রিংয়ে তিতাস গ্যাসের ঢাকা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্লানিং) আবদুল ওয়াহাব তালুকদার বলেন, ‘মসজিদের উত্তর পাশে বর্ধিত করা হয়েছে। সেখানে ফাউন্ডেশন দেওয়ার সময়ে মসজিদের চার নাম্বার কলাম স্থাপনের সময়ে নিচে আমাদের পাইপ লাইন ছিল। ফাউন্ডেশনের কলাম বসাতে গিয়ে পাইপ লাইনের র‌্যাপিং নষ্ট করে ফেলে। এ র‌্যাপিং নষ্ট করার কারণে গ্যাসের পাইপ মাটির সঙ্গে সংস্পর্শে এসে ছিদ্র হয়েছে। সে কারণেই পরে লিকেজ করে গ্যাস ছড়িয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ওই একটি কলামের ফাউন্ডেশনের নিচেই ছয়টি লিকেজ পাওয়া গেছে। অন্য কোথাও আর কোনো সমস্যা নেই। ওখানে লিকেজ বন্ধ করার পরে মসজিদের ভেতরে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি। এতেই প্রতীয়মান হয় একটি কলাম বাড়ানোর সময়ে ফাউন্ডেশন দিতে গিয়ে নিচে থাকা গ্যাসের পাইপের র‌্যাপিং নষ্ট করে ফেলে। তাছাড়া মসজিদ কমিটি রাস্তা দখল করে ওই ফাউন্ডেশন করেছে।’

তিনি জানান, আজ সন্ধ্যায় খোঁড়াখুঁড়ির পরে পুরো মসজিদের ভেতরে পানি দিয়ে ভরে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সেখানে কোনো গ্যাস পাওয়া যায়নি। পরে এলাকার গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে।

আবদুল ওয়াহাব তালুকদার বলেন, ‘মসজিদ করার সময়ে ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি করপোরেশন কিংবা রাজউকের কোনো অনুমোদন নেই। বিদ্যুতের দুটি লাইন আছে মসজিদে। একটি বৈধ আরেকটি অবৈধ। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার সময়ে আরেকটি লাইন পরিবর্তন করতে গিয়ে স্পার্ক করেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’

‘আমরা ইতোমধ্যে সরেজমিনে পর্যবেক্ষণের কাজ শেষ করেছি। এ ছাড়াও, গতকাল রাতে মসজিদ কমিটির সভাপতিসহ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের লিখিত তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে,‘ বলেন তিনি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ তিতাস খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে ওয়াসার পানির লাইন অনেক জায়গায় নষ্ট করেছে। এ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাসের ঢাকা অফিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্লানিং) বলেন, ‘আগামীকালও আমাদের হাতে সময় আছে। যদি এমন কোথাও হয়ে থাকে এলাকাবাসী জানালে কিংবা ওয়াসা জানালে আমরা মেরামত করে দিব।’

Comment here