ঘুষ নিয়ে নার্স বদলি করতেন জামাল, অ্যাকাউন্টে ৭ কোটি টাকা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

ঘুষ নিয়ে নার্স বদলি করতেন জামাল, অ্যাকাউন্টে ৭ কোটি টাকা

সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্স বদলিতে জামাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির কোটি কোটি টাকা ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নার্সদের কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে টাকা নিতেন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে, থাকেন রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে।

মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ সংক্রান্ত দুদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। নার্স বদলিতে অনিয়ম-দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে এ প্রতিবেদন তৈরি করে দুদক।


প্রতিবেদনে বলা হয়, জামাল উদ্দিন নার্সদের বদলির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা না হয়েও তার ব্যাংক হিসাবে দেশের বিভিন্ন জেলার নার্সরা ঘুষ বাবদ টাকা জমা দিয়ে বদলি হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে নার্সদের বদলির সঙ্গে বদলি সংশ্লিষ্ট (নার্সিং ও মিডওয়াইফারি) কোনো কর্মকর্তা ঘুষ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত আছেন কি না, তা নির্ণয় হওয়া জরুরি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জামাল উদ্দিনের সংশ্লিষ্ট হিসাবে মোট ৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। মূলত দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সরা নিজ নিজ জেলায় বা বিভাগে বদলির জন্য জামাল উদ্দিনকে এই টাকা দিয়েছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের এক বা একাধিক কর্মকর্তার সহায়তায় জামাল উদ্দিন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত নার্সদের তাদের পছন্দের কর্মস্থলে বদলি করেছেন বলে নার্সরা জানিয়েছেন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি দফতরের এক বা একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে জামাল উদ্দিনের সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য ওইসব কর্মকর্তার আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বদলির জন্য নার্সদের কাছ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণ করে জামাল উদ্দিন ও তার সহযোগীরা। ৫টি ব্যাংকের ১৪টি হিসাব নম্বর ব্যবহার করে এ ঘুষ নেয়া হয়।

হাইকোর্টে প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতরের কোন কোন কর্মকর্তা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে এই নার্স বদলিতে জড়িত সেই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে দাখিল করতে দুদককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, এরই মধ্যে দুদকের পক্ষে থেকে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) চিঠি দেয়া হয়েছে। চিঠিতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি দফতরের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ব্যাংক লেনদেনের হিসাব বিবরণী চাওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব বলেন, আজ আংশিক প্রতিবেদন দাখিল করেছে দুদক। ২০ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদককে বলা হয়েছে।

Comment here