চরভদ্রাসনের উপনির্বাচন বাতিল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

চরভদ্রাসনের উপনির্বাচন বাতিল

সুমন ইসলাম : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশনার সচিবালয়ের এক আদেশে এ কথা জানা গেছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান রাত ৮টার দিকে স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশক্রমে উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান নির্বাচন পরিচালনা কমিটি-২ অধি: শাখা স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।’

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ফরিদপুর জেলা চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের শূণ্য পদে ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিট গঠন করা হয়। কমিটি তদন্ত শেষে নির্বাচন কমিশনারের নিকট প্রতিবেদন পেশ করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে নির্বাচন পরিচালনায় অনিয়ম সংঘটিত হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় নির্বাচন কমিশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা ২০১৩’র বিধি ৮৮ অনুসারে বাতিল করা হয়েছে। নতুন নির্বাচনের তারিখ পরবর্তিতে ঘোষণা করা হবে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য উপজেলার আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. কাওসার হোসেনকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি রিসিভ করেননি। তবে আরেক প্রার্থী ওবায়দুল বরি বিষয়টি নিয়ে নিজের মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘এতে প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে। আমাদের দাবি, দ্রুত আবার নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। প্রস্তুত করা হোক এমন একটি পরিবেশ যাতে সকলে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন।’

গত ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালট পেপারে সিল মেরে বাক্সে ভরে রাখার অভিযোগে ১৫ নম্বর চরভদ্রাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচন শুরুতেই স্থগিত করা হয়। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটর ছিলেন দুই হাজার পাঁচশত জন।

নির্বাচনের দিনে একটি কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টার ঘটনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এক সমর্থককে নির্বাহী হাকিম আটক করার প্রতিবাদ জানিয়ে ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চরভদ্রাসনের ইউএনও জেসমিন সুলতানাকে মুটোফোনে ফোন করে প্রকাশ অযোগ্য অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রাত ৮টার দিকে চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিতে গিয়ে সাংসদ আচরণবিধি ভঙ্গ করে ওই নির্বাচনে ১২ জন নির্বাহী হাকিমকে নিয়োগ দেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জেরা প্রশাসককে ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করেও তিনি অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন।

নির্বাচনে অনিয়ম ও সাংসদের আচরণ সারাদেশে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবুর রহমান নিক্সনের বিরুদ্ধে তিন দফা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গত ১৫ অক্টোবর চরভদ্রাসন থানায় মামলা করে নির্বাচন কমিশন।

এ ছাড়া গঠন করা হয় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। এ কমিটি গত ২১ ও ২২ অক্টোবর ফরিদপুর ও চরভদ্রাসনে সরেজমিনে পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্টদের মতামত ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। কমিটির প্রধান ছিলেন নির্বাচন কমিশন এর অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার সাহা। সদস্য সচিব ছিলেন নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. সায়েদুন্নবী চৌধুরী এবং সদস্য হলেন ঢাকা নির্বাচন ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক নূরুজ্জামান তালুকদার।

 

Comment here