চাপাতির ২৫ কোপে আমজাদকে হত্যা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ক্রাইম

চাপাতির ২৫ কোপে আমজাদকে হত্যা

রাজধানীর যাত্রাবাড়ির কাজলায় ‘কর্ণফুলী সুইট মিট’ এর ম্যানেজার আলী আমজাদ খানকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার সহকর্মী আব্দুর রহমান ওরফে ডিপজলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  গতকাল শুক্রবার রাতে সিলেটের হবিগঞ্জ সদর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে ডিপজল। খুনের আদ্যোপান্ত জানিয়ে আজ শনিবার আদালতে রোমহর্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে সে।

ডিপজল জানিয়েছে, মিষ্টির ওই দোকানের ক্যাশ লুটে বাধা দেওয়ায় চাপাতির ২৫ কোপে আমজাদ খানকে হত্যা করে সে নিজেই।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিলাল আল আজাদ দৈনিক আমাদের সময়েকে জানান, ঘটনার ৭ মাস আগে যাত্রাবাড়ির কাজলা ব্রিজের ঢালে অবস্থিত জনৈক সেন্টু ঘোষের কর্ণফুলী সুইট মিট ম্যানেজার হিসেবে যোগ দেন আমজাদ খান। তার বাবার নাম মৃত মুসলিম খান।  তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর।

গত ৩০ জুন বিকেলে ওই মিষ্টির দোকানে কারিগর হিসেবে যোগ দেন আব্দুর রহমান ডিপজল। ওই দোকানেই রাত্রিযাপন করতেন তারা। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকান মালিক ক্যাশে ৯ হাজার ৭শটাকা আমজাদকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান।

সে দিন রাত আটটার দিকে ম্যানেজার আমজাদের কাছে কিছু টাকা ধার চায় ডিপজল। ম্যানেজার টাকা না দিলে দুজনে শুয়ে পড়েন। রাত বারোটার দিকে ম্যানেজার চা পানের জন্য বাহিরে গেলে ডিপজল এই সুযোগ লুফে নেয়। একপর্যায়ে ক্যাশ ভেঙে টাকা চুরি করার চেষ্টা করে।

এ সময় আমজাদ রুমে ঢুকে ক্যাশ লুটে ডিপজলকে বাধা দিলে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে হাতের কাছে ধারালো একটি ছুরি দিয়ে আমজাদের হাতে পোচ দেয় ডিপজল। এরপর নিজের  ব্যাগে থাকা একটি চাপাতি (১৫০ টাকা দিয়ে কেনা) দিয়ে হাতে আঘাত করলে আমজাদের একটি আঙ্গুল কেটে পড়ে যায়।

আমজাদ হাতের কাছে পাওয়া একটি বটি দিয়ে ডিপজলকে ফেরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ডিপজলের সঙ্গে পেরে ওঠেননি তিনি। একপর্যায়ে আমজাদের হাতের বটি কেড়ে নিয়ে চাপাতি এবং বটি দিয়ে ম্যানেজারের মাথা থেকে পা পর্যন্ত এলোপাতাড়ি ২০ থেকে ২৫টি কোপ দিলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নিথর হয়ে যান আমজাদ।

এরপর ক্যাশ বাক্স ভেঙে ৮ হাজার টাকা নিয়ে দোকানের শাটার তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যায় ডিপজল। পথে একটি চলন্ত ট্রাকের উপর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিটি ফেলে দেয় সে।

পরদিন দোকান মালিক সেন্টু ঘোষ দোকান খোলার পর আমজাদের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই মো. আব্দুল আউয়াল যাত্রাবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই মামলার চার্জশিট দেয়া হবে বলেও এসআই বিলাল আজাদ জানান।

Comment here