চাল উৎপাদনে চমক দেখাবে বাংলাদেশ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

চাল উৎপাদনে চমক দেখাবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের তা-বে যখন সারাবিশ্ব টালমাটাল, ঠিক তখনি বাংলাদেশের চাল উৎপাদনে এল নতুন সুখবর। কয়েক বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় শীর্ষ তিনে উঠে আসছে দেশ, যা এতদিন ছিল চতুর্থ। চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থান দখলে রেখেছিল ইন্দোনেশিয়া। চীন ও ভারত যথাক্রমে বিশ্বের প্রথম ও দ্বিতীয় উৎপাদনকারী দেশ। বৈশ্বিক কৃষি উৎপাদন পরিস্থিতির সব শেষ তথ্য নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে সুখবরটি দিয়েছে মার্কিন কৃষি দপ্তর (ইউএসডিএ)।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন কেমন হতে পারে, সে বিষয়ক আর একটি প্রতিবেদন গত সপ্তাহে প্রকাশ করে ইউএসডিএ। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে বৈরী আবহাওয়া ও নানা সংকটের কারণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি শস্যÑ চাল, গম ও ভুট্টার উৎপাদন কমছে। কিন্তু ঠিক তার উল্টো চিত্র বাংলাদেশে।

অনুকূল আবহাওয়া ও উপকরণ সহজলভ্য থাকায় এবার দেশে ওই তিন খাদ্যশস্যের উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণ বাড়বে, প্রায় ১০ লাখ টন। আমন, আউশ ও বোরো তিন মৌসুমেই চালের উৎপাদন ভালো হওয়ায় চলতি বছর শেষে ৪ লাখ টনের বেশি উৎপাদন বাড়বে। এতে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। গত এক বছরে চালের উৎপাদন বেড়েছে ৩ শতাংশ। আর স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের তুলনায় সেটা প্রায় তিনগুণ। গত বছর দেশে চাল উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৩ কোটি ৫৬ লাখ টন।

ইউএসডিএর প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্বে ৫০ কোটি ২০ লাখ টন ছাড়াতে পারে চালের উৎপাদন, যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২ শতাংশ বেশি। বরাবরের মতো চীন সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদন করবে, ১৪ কোটি ৯০ লাখ টন। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এবার চাল উৎপাদন দাঁড়াবে ১১ কোটি ৮০ লাখ টন। এর পরই ৩ কোটি ৬০ লাখ টন উৎপাদন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসবে বাংলাদেশ। আর দীর্ঘদিন ধরেই তিন নম্বর স্থানটি দখলে রাখা ইন্দোনেশিয়া চতুর্থ অবস্থানে নেমে যাবে। দেশটিতে চালের উৎপাদন হবে ৩ কোটি ৪৯ লাখ টন।

এবার চাল উৎপাদনের শীর্ষ ১২টি দেশের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার পরই থাকছে ভিয়েতনাম (২ কোটি ৭৫ লাখ টন), থাইল্যান্ড (২ কোটি ৪ লাখ টন), মিয়ানমার (১ কোটি ৩১ লাখ টন), ফিলিপাইন (১ কোটি ১০ লাখ টন), জাপান (৭৬ লাখ ৫০ হাজার টন), পাকিস্তান (৭৫ লাখ টন), ব্রাজিল (৬৯ লাখ) ও কম্বোডিয়া (প্রায় ৫৮ লাখ টন)। ইউএসডিএর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত এক বছরে বিশ্বজুড়ে চালের উৎপাদন দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল উৎপাদনকারী দেশ চীনের উৎপাদন ১ দশমিক ১৯ শতাংশ কমেছে। বিশ্বের অন্যতম চাল রপ্তানিকারক দেশ থাইল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ, মিয়ানমারে প্রায় ২ শতাংশ উৎপাদন কমেছে। ভারত ও ভিয়েতনামে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ। আর সবচেয়ে বেশি চালের উৎপাদন বেড়েছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে, প্রায় ৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘দেশের কৃষকরাই এ অর্জনের প্রধান দাবিদার। এর সঙ্গে এ খাতে নিয়োজিত সম্প্রসারণকর্মী, বিজ্ঞানী, গবেষক ও বেসরকারি খাতের অবদান রয়েছে। তাদের সহায়তা করার জন্য আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা শুধু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উপকরণ, আর্থিক ও নীতিসহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সরকারপ্রধান কৃষি ও কৃষকদের জন্য অন্তঃপ্রাণ। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশের চাল উৎপাদনে বৈশ্বিক এ সফলতা এসেছে।’

Comment here