বরগুনার পাথরঘাটায় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার খানের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে।
গত রোববার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা বিদ্যালয় ব্যাবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর গত বুধবার বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদারের কাছে এ ঘটনা জানায় ওই ছাত্রী ও তার পরিবার। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকের সামনেই বিভিন্ন সময় দেওয়া উপহার ও মোবাইলে পাঠানো আপত্তিকর খুদে বার্তা ইউএনওকে দেখায় ওই ছাত্রী।
ছাত্রীর বাবা বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পাস কারার পর মেয়েকে স্কুলটিতে ভর্তি করি। নবম শ্রেণিতে ওঠার পর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার নানা কৌশলে আমার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। গত ১৩ মার্চ স্কুল শিক্ষাসফরের কথা বলে আমার মেয়েকে বরিশালে নিয়ে দোয়েল আবাসিক হোটেলে রাত যাপনও করেন। বরিশাল থেকে ফেরার পর মেয়ের শারীরিক অসুস্থতা দেখে তার কাছে জানতে চাইলে, মেয়ে সব ঘটনা খুলে বলে। সম্মান রক্ষায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে আমার মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি বাল্যবিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বিদ্যালয় ব্যাবস্থাপনা কমিটির কাছে বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছি।
পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তরিকুল ইসলাম রেজা বলেন, এ ধরনের জঘন্য কাজ যারা করেন তারা দুষ্ট প্রকৃতির। এদের কারণেই শিক্ষক সমাজের মানক্ষুন্ন হয়। ঘটনা যদি সত্য হয় তবে এর তীব্র নিন্দা জানাই।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন আকন দৈনিক মুক্ত আওয়াজ কে বলেন, বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষাপটে বুধবার ব্যবস্থাপানা কমিটি ও শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে। ওই সভায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার খানকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার আমাদের সময়কে বলেন, ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবক আমার কাছে এসে ঘটনা জানিয়েছেন। ঘটনা শুনে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে এবং তাদেরকে ব্যাবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ওই ছাত্রীকে আইনি পরামর্শের জন্য থানায় যেতে বলা হয়েছে।
Comment here