ডিএসইতে দশ হাজার কোটি টাকা কমেছে একদিনে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
শেয়ারবাজার

ডিএসইতে দশ হাজার কোটি টাকা কমেছে একদিনে

নিজস্ব প্রতিবেদক :  এমনিতেই শেয়ারবাজারের অবস্থা সঙ্গিন। তার ওপর পড়েছে করোনার থাবা। এর প্রভাবে গতকাল রবিবার একদিনেই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ১০ হাজার কোটি টাকা কমেছে। গত ৭ কার্যদিবসে মূলধন কমেছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। গতকাল ডিএসইর মূল্যসূচক কমেছে ১৬০ পয়েন্ট। এ নিয়ে ৭ বছর পর ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে ডিএসইর মূল্যসূচক। বাজারের এই পরিস্থিতি অতীতে যে কোনো সময়ের চেয়ে শোচনীয়। বিশেষজ্ঞদের

মতে, শুধু করোনা নয়, নজিরবিহীন এ পতনের পেছনে কারসাজি থাকতে পারে। এর সঙ্গে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীও জড়িত থাকতে পারে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। বাজারের অবস্থা গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ। এর আগে ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর সূচক ৩ হাজার ৭৯২ পয়েন্টে ছিল।

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে গত সপ্তাহে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে ৩ কর্মদিবসই ব্যাপক দরপতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। বাজারের তীব্র দরপতন থামাতে বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে গতকাল রাতে দেশে নতুন করে দুজন করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ায় আবার বড় পতনের মুখে পড়ল বাজার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব প্রতিষ্ঠান আগে বিনিয়োগকারীদের ঋণ দিয়েছিল, তারা গতকাল শেয়ার বিক্রি করেন। এতে বাজারে লাগামহীন পতন হচ্ছে। ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে গত ৩ মার্চ ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। গতকাল পর্যন্ত তা কমে ৩ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকায় নেমে আসে। ডিএসইতে ৩৫৫টি কোম্পানির ১৬ কোটি ৯১ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ৩৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১০টি কোম্পানির শেয়ারের, কমেছে ৩৩৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৭টির। ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৬০ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৯৬৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক ৪৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৩৩ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩১ পয়েন্ট কমে ৯২৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে।

ডিএসইতে লেনদেনে শীর্ষ দশ কোম্পানির মধ্যে ছিল মুন্নু সিরামিক, গ্রামীণফোন লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা, স্কয়ার ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ, সামিট পাওয়ার, লাফার্জহোলসিম, ওরিয়ন ইনফিউশন, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ন্যাশনাল টিউবস। ডিএসইতে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হলোÑ ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, মুন্নু সিরামিক, অ্যাপেক্স স্পিনিং, আজিজ পাইপ, মতিন স্পিনিং, গ্রিন ডেল্টা মিউচুয়াল ফান্ড, বিজিআইসি, সি পার্ল বিচ, প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। অন্যদিকে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হলোÑ অ্যাপোলো ইস্পাত, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, আইডিএলসি, শ্যামপুর সুগার মিল, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, জিল বাংলা সুগার মিল, মেঘনা সিমেন্ট, সোনারগাঁ টেক্সটাইল, সমতা লেদার এবং মেট্রো স্পিনিং।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের দরপতনের যৌক্তিক কারণ নেই। এই পতনের পেছনে কারা জড়িত সেটি খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষ করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কী করছে, তা তদন্ত করা উচিত।

Comment here