দুদককে আগে নিজ ঘরে অভিযান চালাতে বললেন রাষ্ট্রপতি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

দুদককে আগে নিজ ঘরে অভিযান চালাতে বললেন রাষ্ট্রপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজের ঘর থেকেই অভিযান শুরু করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, অন্যের দুর্নীতি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আগে নিজেদের অনিয়ম ও অসততা দূর করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের রেকর্ড করা বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যের যোগসূত্র হচ্ছে আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের উচ্চকৃত কণ্ঠ বিশ্বব্যাপী উচ্চারিত হচ্ছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য “আপনার অধিকার, আপনার দায়িত্ব : দুর্নীতিকে না বলুন” অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও অর্থবহ হয়েছে বলে আমি মনে করি। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত দুর্নীতিবিরোধী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দুর্নীতি দমনে অঙ্গীকারবদ্ধ। দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ তথা সমাজে সততা এবং নিষ্ঠাবোধ বিকাশের লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ দুর্নীতি দমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশই এর কু-প্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। সামাজিকভাবে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব জাগ্রত না হলে কেবল দুর্নীতি দমন কমিশনের একার পক্ষে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয়। মানুষের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী সচেতনতা তৈরি এবং দুর্নীতগ্রস্ত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমেই কেবল দুর্নীতিকে সহনশীল মাত্রায় কমিয়ে আনা সম্ভব। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই।’

কমিশনের সব পর্যায়ের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি কমিশনের সব পর্যায়ের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে তারা যেন সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা প্রদর্শন করেন। অন্যের দুর্নীতি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার আগে নিজেদের অনিয়ম ও অসততা দূর করতে হবে। যারা রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবে তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হবে এবং দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না। জনমনে এমন ধারণা জন্মাতে পারলেই দুদকের ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের কৌশলও বদলেছে। তাই তাদের আইনের আওতায় আনতে হলে দুদককেও আরও কৌশলী হতে হবে, প্রশিক্ষিত জনবল ও প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একজন দুর্নীতিবাজের পরিচয় শুধুই একজন দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। আগামী দিনগুলোতে দুদককে দুর্নীতি দমনে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এ সময় দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) মোজাম্মেল হক খান, কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক এবং প্রতিষ্ঠানটির সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Comment here