নিজস্ব প্রতিবেদক : সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের মৃত্যু হয়। সহপাঠীর এমন মৃত্যুতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নটরডেম কলেজের কয়েকশ শিক্ষার্থী গুলিস্তানে অবস্থান নেয়। এ ঘটনায় আরও কয়েকটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ফার্মগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করেছে।
একই ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা নেমেছে শান্তিনগরের রাস্তায়। শহরের ব্যস্ত এসব পয়েন্টে বিক্ষোভ করায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে আশপাশের সব সড়কে। বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
পুলিশ জানায়, নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে কলেজের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে যান। সেখানে কিছুসময় অবস্থান নিয়ে থেকে পরে তারা যান গুলিস্তানের সেই জায়গায়, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে।
কয়েকশ শিক্ষার্থীর ওই জমায়েত থেকে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে: ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’। তবে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের পল্টন থানার পরিদর্শক (ট্রাফিক) মশিউর রহমান। এদিকে ফার্মগেট এলাকায় শিক্ষার্থীদের জমায়েত শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। বেলা ১১টার দিকে তারা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে তারা অবরোধ করেছে। পুলিশ তাদের রাস্তা থেকে সরিয়ে দিতে কাজ করছে।’ বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই বিভিন্ন কলেজের ইউনিফর্ম পরে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছেন। তারা নাঈম হাসানের মৃত্যুর ঘটনার বিচার চেয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুরে গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ যায় ১৭ বছরের তরুণ নাঈমের। নটরডেম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন তিনি। কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা শাহ আলমের ছেলে নাঈম দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট। তার বাবা নীলক্ষেতের একটি বইয়ের দোকানের মালিক। নাঈমের মৃত্যুর পর তার সহপাঠিরা দুপুর থেকে বিকাল অবধি গুলিস্তানে সড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখায়। পরে শিক্ষকরা বুঝিয়ে তাদের সরিয়ে নেন।
ঘটনার পরপরই সিটি করপোরেশনের ওই গাড়িচালক রাসেল খানকে আটক করা হয়। তবে তিনি সিটি করপোরেশনের নিয়োগপ্রাপ্ত গাড়িচালক নন বলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সড়ক পরিবহন আইনে করা মামলায় রাসেলকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হবে।’
Comment here