সারাদেশ

নাটোরে ঐতিহাসিক শহীদ সাগর দিবস পালিত

সজিবুল ইসলাম হৃদয়, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের শহীদ সাগর দিবস পালিত । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৫ মে সুগারমিল অবরুদ্ধ করে তৎকালীন প্রশাসকসহ ৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ শতাধিক লোককে ব্রাশ ফায়ার করে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

৫ মে (রবিবার) শহীদদের স্মরণে নর্থ বেঙ্গল সুগারমিল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকালে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ, শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, খতমে কোরআন ও মিলাদ মাহফিল। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুরস্থ নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের তৎকালীন প্রশাসক লে. আনোয়ারুল আজিমসহ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীকে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়। সেই পুকুরের নামকরণ করা হয়েছে ‘শহীদ সাগর’। প্রতিবছর এই দিনে শহীদ পরিবারের সদস্যরাসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ সমবেত হন ‘শহীদ সাগর’ চত্বরে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হানাদার বাহিনীর নাটোর ক্যাম্পের ইনচার্জ মেজর শেরওয়ানীর আশ্বাসে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের তৎকালীন প্রশাসক লে. আনোয়ারুল আজিম যথারীতি মিলের উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হানাদার মেজর তার ওয়াদার বরখেলাপ করেন। ৫ মে বেলা ১১টার দিকে অবাঙালিদের সহযোগিতায় বর্বর পাক বাহিনী সুগার মিলের সবগুলো গেটে তালা লাগিয়ে মিলের বিভিন্ন অফিস ও কর্মক্ষেত্র থেকে কর্মকর্তা, শ্রমিক-কর্মচারীদের ধরে এনে মিলের ১নং গেট সংলগ্ন পুকুর ঘাটে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার পর পুকুরে ফেলে দেয়। ওই পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের ৪২ জনের নাম জানা যায়।

শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে শহীদ সাগর চত্বরে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ এবং শহীদ স্মৃতি জাদুঘর। উল্লেখ্য, ২০০০ সাল থেকে দিনটিকে বাংলাদেশের চিনিকল সমূহের শহীদ দিবস হিসাবে দেশের সবকটি চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীরা পালন করছেন। প্রতি বছর এই দিনে শহীদদের আত্মীয়-স্বজন, মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন শহীদ সাগরে সমবেত হন।

Comment here

Facebook Share