শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের জাজিরায় নিজের ছেলেকে বোনের বাসায় রেখে অপহরণ নাটক সাজানোর অভিযোগে মোক্তার হোসেন (৩৬) নামের আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার শরীয়তপুর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামান এ তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার জানান, মোক্তার হোসেন জাজিরা উপজেলার বড়কান্দি ইউনিয়নের আব্দুল বেপারী কান্দি গ্রামের সুলতান খানের ছেলে। তিনি তার নিজের ছেলে নাঈম (৯) কে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব দোলেশ্বর গ্রামে মোক্তারের খালাতো বোন লিপি আক্তারের বাসায় রেখে এ অপহরণ নাটক তৈরি করার চেষ্টা করেন।
তিনি জানান, গত সোমবার সকাল ৮টার দিকে মোক্তার কাজীর হাট হয়ে রূপবাবুর হাটে যান। বেলা ১২টার দিকে রূপবাবুর হাটে একটি চায়ের দোকানে চা পান করার সময় তার ছেলে নাঈম প্রস্রাব করার কথা বলে বিপরীত দিকে রাস্তার ঢালে যায়। এসময় হঠাৎ করে চায়ের দোকানের সামনের রাস্তায় জাজিরার দিক হতে দুটি মাইক্রোবাস ও কাজীরহাট থেকে আশা একটি বাসের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এরপর যানজট সরে গেলে মোক্তারের ছেলেকে আর পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান। অনেক খোঁজাখুঁজি করে ছেলেকে না পেয়ে কান্নাকাটি করে দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ী ফিরে এসে আত্মীয়-স্বজনদের এই ঘটনা জানান। তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৭৮৮৯৯০৯.. এ ০১৭৮৩৫১৮২.. থেকে অপহরণকারী মুক্তিপণ চেয়ে তাকে ফোন করে বলে দাবি করেন।
পুলিশ সুপার জানান, তার নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোহাম্মদ আল মামুন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর হায়দার শাওন, ডিআইও-২ সাইফুল আলম ও ডিবি পুলিশের একটি দল জাজিরা পুলিশের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কথিত অপহৃত নাঈমের অবস্থান নিশ্চিত হয়। অপহৃতের বাবাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে পরিকল্পনাকারী মোক্তার হোসেন অপহরণ নাটক সাজানোর কথা স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অর্থনৈতিকভাবে দারুণ সমস্যায় আছি। সংসারের অভাব অনটন ও ধার-দেনা থাকায় সচ্ছল আত্মীয় স্বজন থেকে ছেলের মুক্তিপণের নামে কৌশলে টাকা পয়সা আদায়ের জন্য আমার বন্ধু সাব্বির (৩৫) এর সঙ্গে যোগাযোগ করে ছেলেকে নিয়ে মাওয়া ঘাট পার করে খালাতো বোনের বাসায় কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ দোলেশ্বরে রেখে আসি।’
পুলিশ সুপার এস.এম আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘এটি একটি সাঁজানো ঘটনা। এই পরিকল্পিত মিথ্যা অপহরণ ও গুমের ঘটনার কারণে মোক্তার হোসেন যেমন টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতে চেয়েছিলেন, তেমনিভাবে সমাজে আতঙ্ক ও ভয়ের সৃষ্টি হতো। পুলিশ ধারণা করছে, এই ঘটনার পরে সামাজিক হানাহানি ও অরাজকতা সৃষ্টি হতে পারতো। তাই অপহরণ নাটক সাজানো মোক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
Comment here