পরীমনির বিষয়ে হারুন কেন যেন আগ্রহী : সাঈদ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

পরীমনির বিষয়ে হারুন কেন যেন আগ্রহী : সাঈদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংসদে এক্সপাঞ্জের মুখে পড়েছেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। সংসদে দেওয়া বক্তব্য নিয়ে তিনি দুই দফায় এক্সপাঞ্জের মুখোমুখি হন। তার একটি বক্তব্য স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এক্সপাঞ্জের ঘোষণা দিলেও অন্যটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাননি। গতকাল শনিবার জাতীয় সংসদে গান্ধী আশ্রম (ট্রাস্টি বোর্ড) বিল ২০২১ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের বক্তব্যকালে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করার কারণে প্রথমে এক্সপাঞ্জের মুখোমুখি হন। হারুন তার বক্তব্যে সামরিক শাসনামলে পাস হওয়া আইনগুলো নতুন করে পাস করার বাধ্যবাধকতা নিয়ে প্রশ্নে তোলেন। বাংলাদেশে এখন একটি প্রতিহিংসার রাজনীতি বিদ্যমান। হানাহানি সংঘাত-সংঘর্ষ এবং গণতন্ত্রহীন পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমাদের দেশ পরিচালিত হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল বলেন, সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ তার আসল রূপ আজ বের করে দিয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যে নির্মম হত্যাকাণ্ড তারা ঘটিয়েছিলেন, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ যে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স তারা বানিয়েছিলেন। এটি নিয়ে তখন উনারা বলেননি যে উনি এখন বললেন এটি আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবী (হারুন বলেছেন আওয়ামী সমর্থিত বিচারক)। সংসদ সদস্য ভুলে যান, একটা দেশের জনগণ সুপ্রিমকোর্টের ব্যাপারে এভাবে উক্তি করতে পারেন? এটি দুঃখজনক। তিনি বলেন, ব্যাপারটা হচ্ছে, উনি তখন কোথায় ছিলেন। বলেছেন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। উনার নেতা জাতির পিতাকে খুন করার পরে যে একুশ বছর দেশ চালিয়ে গেছেন একটি এফআইআর হয়নি। ইনডেমনিটি যখন হয় সেটা একটি প্যাকেটের মধ্যে ভরে সব আইন এই সংসদের মধ্যে বসে করে ফেললেন। তখন উনি কোথায় ছিলেন? উনারা এখন বলছেন সুপ্রিমকোর্টের বিচারকরা হচ্ছে আমাদের মতের।

এ প্রসঙ্গে জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিচার বিভাগের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, যখন খুনি জিয়াউর রহমান অবৈধ সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তখন একজন অত্যন্ত যোগ্য বিচারপতি আপিল বিভাগে ছিলেন। সিনিয়রিটি মেইনটেইন করা হলে তিনি প্রধান বিচারপতি হতেন। কিন্তু তিনি যেন প্রধান বিচারপতি হতে না পারে তার জন্য ছলেবলে কৌশলে তাকে বিচারপতির আসন থেকে সরানোর চেষ্টা হলো। তাকে লিয়েন ছাড়াই রাষ্ট্রদূত বানিয়ে দেওয়া হলো। বিচারপতি কেএম সোবহানকে পূর্ব জার্মানির রাষ্ট্রদূত বানিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। এর পর বিচারপতির আসনে তিনি বসতে পারেননি। প্রধান বিচারপতিও হতে পারেননি।

হারুনকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, ওনাদের আচরণ হচ্ছে এমনই। ওনাদের থেকে গণতন্ত্রের বার্তা শুনতে এখানে বসিনি। গণতন্ত্রের বার্তা শুনব সেটিও আমার বিশ্বাস নয়। রাষ্ট্রের একজন নাগরিক সংসদে দাঁড়িয়ে সুপ্রিমকোর্ট সম্পর্কে এ রকম কথা বলতে পারেন তা দুঃখজনক। আমি আবারও অনুরোধ করছি একপাঞ্জ করার জন্য। পরে স্পিকার ওই বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করা হবে বলে হাউসকে জানান।

এদিকে শুক্রবার পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যকালে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বোট ক্লাবের সভাপতি হওয়া বিষয়ে হারুনের বক্তব্য এক্সপাঞ্জ চেয়েছেন সরকারদলীয় হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। শনিবার পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ দাবি জানান।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, তিনি (হারুনুর রশিদ) পত্রিকার উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশপ্রধান থেকে শুরু করে অনেকের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। আমি আজকের এই মহান সংসদে গতকাল (শুক্রবার) হারুনুর রশিদের প্রদত্ত বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, তিনি কী কারণে যেন পরীমনির (চিত্রনায়িকা) বিষয়ে বড় বেশি আগ্রহী। আমি জানি না তার বাসায় কী অবস্থা। এর আগেও তিনি পরীমনির বিষয়ে সংসদে কথা বলেছিলেন। গতকালও সুযোগ পেয়ে ওর বিষয়ে সংসদে উপস্থাপন করেছেন।

আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, স্বাধীনতার পরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মদ, জুয়া, হাউজি, রেসকোর্স সব কিছু আইন করে বন্ধ করেছিলেন। কিন্তু শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তার প্রয়াত নেতা জিয়াউর রহমান সাহেব বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলে বাংলাদেশে মদ, জয়া, হাউজি সব কিছু জায়েজ করে দিয়েছেন এবং তারই ধারাবাহিকতায় আজকে বাংলাদেশে মদ, জুয়া, হাউজির বন্ধ করা খুব দুরূহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্পিকার কোনো মন্তব্য করেননি।

 

Comment here