ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার রিকশাচালক শাহজাহান (২১) হত্যাকাণ্ডের সাতদিন পর ঘটনার মূল হোতা বাবুলকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।
একই সঙ্গে বাবুলের স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী শাহজাহানের দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত শাহজাহান উপজেলার গড়বাজাইল গ্রামের মৃত হালিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
গ্রেফতারকৃত বাবুল মুক্তাগাছা থানার বানিয়াকাজী গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে। পাওনা ৭০০ টাকা চাওয়ায় শাহজাহানের দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে লুকিয়ে রাখেন বাবুল।
রোববার দুপুরে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন।
বাবুলের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আবিদ হোসেন বলেন, গত ৩১ মার্চ মুক্তাগাছার বানিয়াকাজী গ্রামের তাইজুল মাস্টারের পুকুর থেকে শাহজাহান নামে এক যুবকের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার দিনই নিহতের বড় ভাই ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মুক্তাগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। শনিবার (৬ এপ্রিল) শাহজাহান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে বাবুলকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে বাবুলকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে শাহজাহানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন বাবুল। একই সঙ্গে শাহজাহান হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বাবুল পুলিশকে জানিয়েছেন, শাহজাহানের সঙ্গে বাবুলের পরিচয় দীর্ঘদিনের। কয়েক মাস আগে শাহজাহানের কাছ থেকে ৭০০ টাকা ধার নেন বাবুল। ৩০ মার্চ রাতে বাবুলের কাছে পাওনা টাকা চান শাহজাহান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে বাবুল কিল ঘুষি দিলে শাহজাহান অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান। অজ্ঞান শাহজাহানকে কাঁধে করে নিয়ে তাইজুল মাস্টারের মাছের খামারের পাড়ে ফেলে দা দিয়ে শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করেন বাবুল। পরে শাহজাহানের দেহ তাইজুল মাস্টারের পুকুরে ফেলে দেন। পাশাপাশি শাহজাহানের বিচ্ছিন্ন মাথায় তিন কিলোমিটার দূরে একটি ডোবায় লুকিয়ে রাখেন।
পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেন, বাবুলের দেয়া দেয়া তথ্য অনুযায়ী ডোবা থেকে শাহজাহানের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়েছে। খুব দ্রুতসময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।
Comment here