পাকিস্তানের লজ্জাজনক হার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ক্রিকেটখেলাধুলা

পাকিস্তানের লজ্জাজনক হার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে

চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে পাকিস্তান। মাত্র ১০৫ রান করতে গিয়েই সব কটি উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। আর ১০৬ রানের টার্গেট হেসে-খেলেই পার করে দেয় ক্যারিবীয়রা। মাত্র ১৩.৪ ওভারেই তারা পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।

আসল কাজটা সেরে রেখেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার পেসার- আন্দ্রে রাসেল, ওশানে টমাস, জেসন হোল্ডার ও শেলডন কট্রেল। এই চারজন মিলে ১০ উইকেট তুলে নিয়ে ১০৫ রানেই পাকিস্তানকে গুটিয়ে দিয়েছিলেন। বাকি কাজ ব্যাট হাতে ঝড় তুলে শেষ করেন ক্রিস গেইলরা। ২১৮ বল হাতে রেখে জিতেছে ক্যারিবীয়রা।

পাকিস্তানের সাথে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ শব্দের সখ্যতা বহু পুরানো। কিন্তু আজ (শুক্রবার) বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে তারা এতটা আনপ্রেডিক্টেবল হয়ে উঠবে, তা বোধ হয় ভাবেননি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় সমালোচকও। একটু লড়াই হলে কথা ছিল। টেন্ট ব্রিজে আজ (শুক্রবার) ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান। এ নিয়ে টানা ১১ ওয়ানডেতে হারের লজ্জা দেখলেন সরফরাজরা।

টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন। ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। তাদের ইনিংস স্থায়ী হয়েছে মাত্র ২১.৪ ওভার। সর্বোচ্চ ২২ রান করেন ফখর জামান। সমান রান করেছেন বাবর আজমও। এছাড়া দুই অঙ্কের দেখা পেয়েছেন শুধু মোহাম্মদ হাফিজ (১৬) ও রিয়াজ (১৮)।

টানা উইকেট পতনের ধারায় একসময় মনে হচ্ছিল ১০০ রানের আগেই থামবে পাকিস্তানের ইনিংস। তবে সেই লজ্জা (!) থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন ১০ নম্বর ব্যাটসম্যান ওয়াহাব রিয়াজ। তার ১১ বলে ১৮ রানের ইনিংসটি বাকিদের জন্য লজ্জা দিতে যথেষ্ট। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সর্বনিম্ন সংগ্রহ ৭৪ রান।অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই ম্যাচে অবশ্য কোনো ফলাফল আসেনি। ১৯৯২ বিশ্বকাপে এ লজ্জায় ডুবলেও ১ পয়েন্টের অবদানেই সেবার ইতিহাস গড়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইমরান খানের দল। ‘৯২ বিশ্বকাপের লজ্জায় না ডুবলেও এবার পাকিস্তান গড়লো নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ড।

৩১ মে (শুক্রবার) নটিংহ্যামে পাকিস্তানের ছুড়ে দেওয়া ১০৬ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা কিছুটা ধীরভাবেই করেছিল উইন্ডিজ। বিনা উইকেটে ৩৬ রান তোলার পর সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা শাই হোপ বিদায় নেন মাত্র ১১ রান করে। তবে এরপর গেইলের ব্যাটে দেখা দেয় ক্যারিবীয় ঝড়।

মাত্র ৩৩ বলে ফিফটির দেখা পান গেইল। এই ইনিংস খেলার পথে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় সাজানো। এই ৩ ছক্কার প্রথমটি মেরেই একটা রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন গেইল। এবারই শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নামা গেইলের বিশ্বরেকর্ড গড়তে দরকার ছিল মাত্র ১টি ছক্কা। এমনিতে সব ধরনের ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ৫১৭টি ছক্কার রেকর্ড তারই। আর আজ প্রথম ছক্কা মেরে তিনি বিশ্বকাপ সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ডও নিজের ঝুলিতে পুরে নিয়েছেন।

২০১৯ বিশ্বকাপের আগে সমান ৩৭টি ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্বকাপ সবচেয়ে বেশি ছক্কার যৌথ মালিক ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স ও গেইল। এখন গেইলের ছক্কা হলো ৩৯টি। ডি ভিলিয়ার্স যেহেতু অবসরে চলে গেছেন, গেইলের এই রেকর্ড এখন অনেকদিন টিকে থাকার পাশাপাশি এর সংখ্যাও বাড়বে এতে সন্দেহ নেই।

গেইলের ওই ঝড় অবশ্য ফিফটির পরই থেমে গেছে। মাঝে ব্র্যাভোর উইকেট তুলে নেন আমির। তবে বাকি পথটা নিশ্চিন্তে পাড়ি দিয়ে দেন নিকোলাস পুরান ও শেমরন হেটমায়ার। ১৯ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ৩৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন পুরান।

ওপেনিংয়ে নেমে ৩৪ বলে ৫০ রানের ঝড় তুলে আউট হন ক্রিস গেইল। ক্যারিবীয় ওপেনারকে ফেরান আমির। তার আগে শাই হোপ (১১) আর ড্যারেন ব্রাভোকেও (০) সাজঘরের পথ দেখান এই পেসারই।

এই ম্যাচে পাকিস্তানের প্রাপ্তিও আমিরের এই ফর্মে ফেরা বোলিং। নিশ্চিত পরাজয়ের ম্যাচেও দলকে ভরসা দিয়েছেন শেষ মূহুর্তে বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নেয়া এই পেসার। ৬ ওভারে ২৬ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন ৩টি উইকেট।

Comment here