ফেসবুক নিয়ে সিনেটে হাউজেনের দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ বলছেন জাকারবার্গ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
আন্তর্জাতিক

ফেসবুক নিয়ে সিনেটে হাউজেনের দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ বলছেন জাকারবার্গ

অনলাইন ডেস্ক:ফেসবুকের সাবেক কর্মী ফ্রান্সেস হাউজেন বলেছেন, ফেসবুক ও তাদের অ্যাপগুলো শিশুদের ক্ষতি করছে। সেইসঙ্গে এর ব্যবহার মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। অন্যদিকে, হাউজেনের তোলা অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ।

গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে সিনেট কমিটির সামনে শুনানিতে ফেসবুকের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন ৩৭ বছর বয়সী এই সাবেক কর্মী

হাউজেন এক সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ছিলেন। তবে এখন তিনি এই কোম্পানির নানা গোপনীয় তথ্য তুলে ধরতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি তিনি ফেসবুকের বেশ কিছু গোপনীয় নথি আরেক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কাছে তুলে ধরেছেন।

সেসব নথিপত্রের ভিত্তিতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, ইনস্টাগ্রামের নিজেদের করা এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এই অ্যাপটি মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে।

এই ব্যাপারে শুনানিতে হাউজেন বলেছেন, ‘কীভাবে এই অ্যাপগুলোকে আরও নিরাপদ করা যায় তা ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের কর্তাব্যক্তিরা জানলেও সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ তারা নেননি।’ এর কারণ হিসেবে হাউজেন এসব অ্যাপ থেকে আসা মুনাফাকেই দায়ী করেছেন।

সেইসঙ্গে তিনি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গের সমালোচনা করে বলেছেন, ‘তিনি নিজে ছাড়া সেখানে তাকে জবাবদিহি করার মতো আর কেউ নেই।’

তবে ফেসবুক বলছে, হাউজেন প্রতিষ্ঠানটির যে বিভাগগুলো নিয়ে কথা বলছেন, সেসব বিভাগ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। হাউজেনের শুনানির পর এক বিবৃতিতে ফেসবুক বলেছে, হাউজেন যেভাবে অনেক বিষয়ে চিন্তা করেছেন, তার সঙ্গে তারা একমত নয়। তবে তারাও মনে করে, ইন্টারনেটের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নিয়মকানুন তৈরির সময় এসেছে।

এদিকে, আজ বুধবার সকালে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যেখানে তিনি ফেসবুকের সাম্প্রতিক বিভ্রাট ও হাউজেনের বক্তব্য প্রসঙ্গে কথা বলেছেন।

স্ট্যাটাসে জাকারবার্গ বলেন, ‘তাদের বিষয়ে যেসব তথ্যপ্রমাণ সম্প্রতি প্রচার করা হচ্ছে, তাতে ফেসবুকের কাজ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেভাবে কোম্পানিকে তুলে ধরা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। আমরা সব সময়েই নিরাপত্তা, মঙ্গল ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে গুরুত্ব দেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের নিরাপত্তা এবং মঙ্গলের চেয়ে আমরা মুনাফার প্রতি বেশি মনোযোগ দেই বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। একটা উদাহরণ হলো, যখন আমরা নিউজ ফিডের ক্ষেত্রে যেসব পরিবর্তন আনি, যার ফলে ভাইরাল ভিডিওর পরিবর্তে মানুষজন নিজেদের বন্ধু এবং স্বজনদের ভিডিও বেশি দেখতে পারে। আমরা জানি, মানুষ এর ফলে ফেসবুকে কম সময় কাটাবে, কিন্তু গবেষণায় যেহেতু এটা মঙ্গলজনক বলা হয়েছে, আমরা করেছি।’ যারা মুনাফার জন্য কাজ করে, তারা এটা করবে কি না এমন প্রশ্নও করেছেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানের তথ্য অনুযায়ী, মাসে তাদের ২৭০ কোটি নিয়মিত ব্যবহারকারী রয়েছে। লাখ লাখ মানুষ এই প্রতিষ্ঠানে হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের মতো অ্যাপও ব্যবহার করে। কিন্তু ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা করতে ব্যর্থতা থেকে শুরু করে ভুয়া তথ্য ছড়ানো বন্ধে যথেষ্ট ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে ফেসবুকের বিরুদ্ধে।

Comment here