বগুড়ায় অক্সিজেন সংকটে ৭ করোনা রোগীর মৃত্যু - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

বগুড়ায় অক্সিজেন সংকটে ৭ করোনা রোগীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক,বগুড়া : বগুড়ায় করোনাভাইরাস বিশেষায়িত সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাতজন রোগী মারা গেছেন। শ্বাসকষ্টের কারণেই এই রোগীদের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

এখনও সেখানে ১০ জন রোগী মুমূর্ষ অবস্থায় রয়েছেন। একই সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে মারা গেছেন আরও তিনজন রোগী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আজ শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে মারা যাওয়া ১০ জনের নাম পরিচয় জানাতে পারেনি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়া নতুন করে ১০ জনের মৃত্যু হওয়ায় মোট মৃত্যু দাঁড়িয়েছে ৪১০ জনে।

বগুড়া জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮০ নমুনার ফলাফলে নতুন করে ১০০ জন করোনায় শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার ২৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। একই সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৫৩ জন। নতুন আক্রান্ত ১০০ জনের মধ্যে সদরের ৬৪ জন, সোনাতলায় ১১ জন, শিবগঞ্জে ২ জন, আদমদীঘিতে ২ জন, দুপচাঁচিয়ায় ৩ জন, কাহালুতে ৪ জন, ধুনটে ৫ জন, গাবতলীতে ৩ জন এবং শাজাহানপুরে ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

আজ শুক্রবার অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বগুড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সাজ্জাদ-উল-হক।

মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট থাকা এই রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য পুরো হাসপাতালে হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মাত্র দুটি। অক্সিজেন সরবরাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মুমূর্ষু করোনা রোগীদের বাঁচানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এই হাসপাতালের ধারণক্ষমতা ২০০ রোগীর হলেও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সেখানে রোগী ভর্তি আছে ২২৩ জন। এর মধ্যে ১০ জন রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা একেবারেই নিচের দিকে, যাঁদের হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা সংকটের একই চিত্র জেলার অন্যান্য হাসপাতালেও।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার তিন হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্ট থাকা রোগীদের জন্য অক্সিজেন সরবরাহের জন্য অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা আছে মোট ২৩টি। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ২টি, শজিমেক হাসপাতালে ১১টি এবং বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি।

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, তাদের হাসপাতালে রোগীর যে পরিমাণ চাপ সেখানে অন্তত ২০টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা প্রয়োজন, কিন্তু আছে মাত্র ২টি। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিক শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত ঘোষণা করার সময় আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা কোনোটাই ছিল না। পরে ৮ শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়। কিন্তু হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলার বরাদ্দ মিলেছে মাত্র দুটি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।’

হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা ছাড়া আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য তেমন কাজে আসে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ২৫টি হাই ফ্লো নাজাল ক্যানুলা দরকার। বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো বরাদ্দ মেলেনি।’

 

Comment here