বিএনপির একমাত্র চাওয়া কী, জানালেন মির্জা ফখরুল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

বিএনপির একমাত্র চাওয়া কী, জানালেন মির্জা ফখরুল

সরকার পতনই বিএনপির একমাত্র চাওয়া বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে লক্ষ্মীপুর থেকে আসা আহত নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দীর্ঘ একযুগের ওপরে আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি- এই ফ্যাসিবাদী, কর্তৃত্ববাদী, নিপীড়ন-নির্যাতনকারী সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে। আমাদের লক্ষ্য একটাই- এই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে মুক্তি চাই, দেশ মুক্তি চায়। এ জন্যে ইতোমধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন, সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অনেক মানুষ গুম হয়ে গেছেন এবং সর্বশেষ গত ১৮ জুলাই লক্ষ্মীপুরে পুলিশ সরাসরি গুলি করে। এতে আমাদের ভাই সজীব হোসেন প্রাণ হারিয়েছেন। অনেকের চোখ বন্ধ (দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছে) হয়ে গেছে।’

advertisement

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন একটাই চাওয়া, একটাই পথ বা রাস্তা সেটা হচ্ছে যে, এদেরকে সরাতে হবে, এদের পতন ঘটাতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এই দেশ নিরাপদ না, আপনারা নিরাপদ না, আমরা কেউই নিরাপদ না। আমাদের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য, আমাদের অস্তিত্ব ফিরে পাবার জন্য, এই যে শিশুটি (সামনের সারিতে বসা সজীব হোসেন সন্তানের দিকে তাঁকিয়ে) এখানে দাঁড়িয়ে আছে সে তার পিতাকে হারিয়েছে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবার বুঝে কি যন্ত্রণা! আপনাদের এই কষ্ট, এই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আন্দোলনে দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। দেশের মানুষ জীবন দিয়ে রাস্তায় নেমেছে। রাস্তায় নেমে এই সরকারকে সরানোর জন্য সংগ্রাম শুরু করেছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকারকে এ দেশের মানুষ এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাবে এবং জনগণের যে সরকার সেই সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’ নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহত নেতাকর্মীদের পাশে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বিএনপি সব সময় পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।

গত ১৮ জুলাই লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পথযাত্রায় কৃষক দলের কর্মী সজীব হোসেন নিহত হন। এছাড়া পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন এবং ছয়জন দৃষ্টিশক্তি হারান। লক্ষ্মীপুরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সহমর্মিতা প্রকাশে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত হয়ে তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। দলের পক্ষ থেকে নিহত সজীব হোসেনের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা শাহাবুদ্দিন সাবুর পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, মাহবুবে রহমান শামীম, হাসান জাফির তুহিন, পুলিশের গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো যুবদলকর্মী মোস্তফা কামাল, শ্রমিক দলের ইকবাল হোসেন, কৃষক দলের বোরহান উদ্দিন, নিহত সজীবের বাবা আবু তাহের প্রমুখ।

এরপর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দেওয়া রায়ের প্রতিবাদে যুবদলের সাবেক নেতাদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। এ অনুষ্ঠানেও ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

যুবদলের প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সভায় যুবদলের সাবেক সভাপতি মির্জা আব্বাস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সাবেক সভাপতি বরকত উল্লাহ বুলু ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বক্তব্য দেন। এই অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

Comment here