পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি : স্বামীর মৃত্যুর পর পাঁচ ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতেন হালিমা বেগম (৬৫)। অন্যের বাড়িতে কাজ ও ভিক্ষাবৃত্তি করে সন্তানদের বড় করেছেন। ছেলেদের বিয়ে দিয়ে বৃদ্ধ বয়সে সুখে থাকার আকাঙ্ক্ষা ছিল তার। কিন্তু বৌয়ের কথা শুনে ছেলে তাকে ঝাড়ুপেটা করবে ভাবতে পারেননি তিনি। মারধরের শিকার হলেও ছেলের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই হালিমার!
ঘটনাটি ঘটেছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের মধ্য কালমেঘা গ্রামে। হালিমা বেগম ওই গ্রামের মৃত বাহের আলী হাওলাদারের স্ত্রী। তিন মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেরাও বিয়ে করে আলাদা ঘরে বসবাস করে। জানা গেছে, বয়সের ভারে আগের মতো কাজ করতে পারেনা হালিমা বেগম। তা নিয়ে বৌ-শাশুড়ির মধ্যে মাঝে মাঝে ঝগড়া হতো। বেশ কয়েকবার মিমাংসাও করেন স্থানীয়রা।
গত রোববার রাতে দিন মজুরের কাজ শেষে বাড়ি ফেরেন হালিমার ছেলে দুলাল। তখন তার কাছে শাশুড়ির বিরুদ্ধে নালিশ করেন পুত্রবধূ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হালিমাকে ঝাড়ুপেটা করেন দুলাল। গতকাল সোমবার বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমানকে জানান হালিমা।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান জানান, হালিমা বেগমকে ঝাড়ুপেটা করার বিষয়টি নিয়ে দুলালের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকেও হয়রানির শিকার হতে হয়। দুলাল এ কারণে তার মাকে ঘর থেকে বের কের দেন।
বিষয়টি স্থানীয় সাংবাদিকরা জানার পর দুলালের বাড়ি গিয়ে তার কাছে বিষয়টি জানতে চান। এ সময় দুলাল তার ভুল স্বীকার করে মায়ের পা ধরে মাফ চান। ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ করবেন না বলেও মায়ের কাছে প্রতিশ্রুতি দেন।
হালিমা বেগমের সঙ্গে কথা হলে আমাদের সময়কে তিনি জানান, বলেন, ‘বৌয়ের কথায় দুলাল মোরে ঝারু (ঝাড়ু) দিয়া মারসে। হেয়ার পরেও তার লাইগ্যা মোর কোনো অবিযোগ (অভিযোগ) নাই। মুই তারে বরদোয়া (অভিশাপ) দেলে হে ধ্বংস হয়ে যাইবে। মুই তারে মাফ কইররে দিসি।’
Comment here