নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য আগামীকাল রোববার ব্যাংকে ৬শ’ কোটি টাকার বেশি টাকা জমা দেবে বাংলাদেশ সরকার। বিনিময়ে সেরাম ইন্সটিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে। আজ শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট অগ্রিম টাকা হিসেবে এটা নেবে এবং বাকি টাকা টিকা সরবরাহ শুরু করার পর দেওয়া হবে। চুক্তির ধারা অনুযায়ী, তারা যদি আগামী জুনের মধ্যে টিকা দিতে না পারে তাহলে বাংলাদেশে অগ্রিম এই টাকা ফেরত নেবে।
সবকিছু ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ টিকা আনতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
গতকাল শনিবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন দিয়েছে ভারত সরকার। সুতরাং ভারতের ওই টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে টিকা আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল।
এর আগে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভারতের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইন্সটিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কেনার জন্য চুক্তি করে। তারই ধারাবাহিকতায় এই কাজ হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, যেকোন টিকার দুটি দিক রয়েছে। একটা টিকা দেশে আনা এবং দ্বিতীয় হলো ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া।
তিনি বলেন, ’এটার ব্যাপারে আইনি অনেক বাধ্যবাধকতা আছে, অনেক রকম আইন আছে আপনারা জানেন। তবে এটা যাতে সরাসরি ক্রয় করা যায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনুমোদন দিয়েছেন।’
অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, টিকা আনার পর সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেইন মেইনটেন করতে হবে। সেজন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে অধিদপ্তর। তারা (বেক্সিমকো) জেলা পর্যায়ে যেসব ডিপো রয়েছে কোল্ড চেইন মেইনটেন করার সক্ষমতা আছে সেই জায়গাগুলোতে পৌঁছে দেবে।
টিকা দেওয়ার জন্য সারা দেশে ২৬ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী এবং সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক কাজ করবেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হবে বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
তিনি আরও বলেন, ‘তারপরেও আমাদের বলা হয়েছে যেগুলো অফিসিয়াল প্রসিডিউর আছে সেগুলো মেইনটেন করতে। আমরা সেগুলো করব। আইনে যা আছে সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করব। ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি এবং অনুমোদন অবশ্যই লাগবে আমরা সেটার ব্যবস্থা করব।’
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার (সিইও) রাব্বুর রেজা বলছিলেন, টিকা ভারত থেকে আনার পর কোল্ড চেইন টঙ্গিতে তাদের দুটি ওয়্যারহাউসে নেওয়া হবে। এরপর সরকার অনুমোদিত ওয়্যারহাউসগুলোতে পৌঁছে দেওয়া হবে। এই ডেলিভারির মধ্য দিয়ে বেক্সিমকোর দায়িত্ব শেষ হবে। এরপর শুরু হবে বিতরণ প্রক্রিয়া, যেটি হবে সরকারি ব্যবস্থাপনায়।
চুক্তি অনুযায়ী, সেরাম ইন্সটিটিউট ৬ মাসের মধ্যে তিন কোটি টিকা দেবে বাংলাদেশকে। প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা আসবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা টিকা পাবেন সেটা একটা প্রাথমিক তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে করা হয়েছে।
Comment here