(তানজিল:-ভোলা প্রতিনিধি) ভোলায় করোনা ঝুকিতে থাকা ১৫৯ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেণ্টাইনে রাখা হয়েছে। তবে সিভিল সার্জনের দাবী ৪২ জনের। এছাড়া চরফ্যাশনে বিদেশ থেকে আসা দুই প্রবাসীকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেণ্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়ার পরও তিনি তা পালন না করায় তাদেরকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গতকাল বুধবার তাকে এ জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ রুহুল আমিন।
সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসে কাপছে পুরো দেশ। এই সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধি নিষেধ জারি করেছেন উপজেলা প্রশাসন। সংক্রমণ ঠেকাতে বিদেশ থেকে ফেরত আসা ভোলার চরফ্যাশনের ১৫৬ জনকে বাধ্যতা মূলক ভাবে ১৪ দিন তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। এ নির্দেশ অমান্যকারীদের জেল জরিমানার করা হবে। এলাকায় মানুষকে গন জমায়েত ও হেনসেক কোলাকুলি হতে বিরত থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গতকাল ১৮ মার্চ বুধবার উপজেলা হল রুমে এক প্রেস কনফারেন্সে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন উপরোক্ত নির্দেশনা দেন।
এসময় উপজেলা আ’লীগ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভিপি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক মিয়া, প্যানেল মেয়র জাহের ভূইয়া, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ শোভন বসাক, চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ সামসুল আরেফিন, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ শোভন বসাক বলেন- এখন পর্যন্ত চরফ্যাশনে কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়নি। তবে বিদেশ থেকে ফেরত আসাদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ রোগ সনাক্তে হাসপাতালে কোন কিট নেই। এ রোগ থেকে বাচতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিনের সাথে রাত সাড়ে ১০টার দিকে যোগাযোগ করা হলে দৈনিক ভোলার বাণীকে জানান, চরফ্যাশন উপজেলায় ১৫৬ জন প্রাবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিকে চরফ্যাশনের দুই প্রবাসী হোক কোয়ারেন্টাইনে ১৪ থাকার যে বিধি-নিশেদ রয়েছে না মানার কারণে তাদেরকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে ভোলায় করোনা ঝুঁকিতে থাকা ৪২ জন বিদেশ ফেরত প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে এমনটা দাবী করছেন ভোলার সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী। এছাড়া করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ভোলা শহরের এক যুবককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালু করা করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাতে দৈনিক ভোলা বাণীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন। এর আগে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ভোলায় ৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার কথা জানায় স্বাস্থ্য বিভাগ।
ভোলার সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী জানান, ভোলার ৬ উপজেলায় এ পর্যন্ত ইতালি, ওমান, আবুধাবি, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, কুয়েত, সৌদি আরব, দুবাই ও ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৪২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় ৫ জন, দৌলতখানে ১২, বোরহানউদ্দিনে ১৭ জন, তজুমদ্দিনে ৭ জন ও চরফ্যাশন উপজেলায় ১ জন রয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা ৪২ জনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের প্রত্যেককে আগামী ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের না হতে কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ এ নির্দেশ না মানলে তাকে জেল জরিমানা করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো জানান, করোনা মোকাবেলায় সদর হাসপাতালে ২০ শয্যার আলাদা আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও একই ভাবে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। জেলার ৭ উপজেলায় ৯টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যেখান থেকে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সকল তথ্য আদান-প্রদান করা হবে। এছাড়াও জরুরি প্রয়োজনে হটলাইন (০১৭১১-১৬৯২৬৫) চালু করা হয়েছে।
এ সময় তিনি জানান, যে সকল রোগী জ্বর, সর্দি, গলা ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালের দ্বারস্থ হবেন, তাদেরকে আলাদা স্ক্যানিং করার জন্য হাসপাতালে করোনা স্ক্যানিং সেন্টার খেলা হয়েছে। সেখানে সার্বক্ষণিক একজন ডাক্তার নিয়োজিত রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী’র সাথে রাত ১০টায় করোনা বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পুরো জেলায় ৪২ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। শুধু চরফ্যাশন উপজেলাতেই ১৫৯ জন প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে এ তথ্য আপনি জানেন কি না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমার জানা নেই।
Comment here