মাছির ভন ভন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ঢাকাসমগ্র বাংলা

মাছির ভন ভন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে

ইউসুফ আরেফিন : সামনে পেছনে খোলামেলা জায়গা, দৃষ্টিনন্দন সুউচ্চ ভবন নিয়ে রাজধানীর মুগদাপাড়ায় অবস্থিত ৫০০ শয্যার মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। বাইরে থেকে চাকচিক্য দেখা গেলেও ভেতরের চিত্রটা কিন্তু তার উল্টো। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনদের চাপে সরকারি হাসপাতালটির ভেতরের পরিবেশ এতই নোংরা হয়েছে যে, সেখানে সুস্থ মানুষের টিকে থাকাই দায়।

প্রতিটি ওয়ার্ডেই ভন ভন করে ঘুরে বেড়াচ্ছে অজস্র মাছি। সুযোগ পেলেই হুল ফুটাচ্ছে লুকিয়ে থাকা মশা। ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট শয্যার বাইরে যেসব ডেঙ্গু রোগী মেঝেতে জায়গা পেয়েছেন, ব্যবস্থা না থাকায় মশারি খাটাতে পারছেন না। ফলে মশা-মাছির উৎপাতে সবাই নাজেহাল। রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। গতকাল শনিবার সরেজমিন এমন চিত্রই দেখা গেছে।

অবশ্য হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকদের অভিযোগ, রোগীর স্বজনরাই যেখানে সেখানে খাবার-দাবার ফেলে পরিবেশ নোংরা করছেন। পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী না থাকায় হাসপাতালকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে মুগদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. খায়রুল আলম আমাদের সময়কে বলেন, ‘একজন রোগীর সঙ্গে দু-তিনজন স্বজন থাকেন। খাওয়ার সময় তারা সচেতন থাকেন না। ফলে খাবারের উচ্ছিষ্ট মেঝেতে পড়ে পরিবেশ নোংরা হচ্ছে। তাতেই মশা-মাছি ভন ভন করে।’

উপপরিচালক আরও বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে জনবলের সংকট। এ কারণেই আপদকালীন সেবা দিতে একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) কাছে জনবল চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। তাই আমরা হয়তো আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কিছু জনবল নিয়োগ দিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম আরও জনবান্ধব করব।’

বেশ কয়েকজন সিনিয়র স্টাফ নার্স জানিয়েছেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে যেখানে তিন থেকে চারজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রয়োজন, সেখানে আছে মাত্র একজন। তাকে আবার অন্য কাজও করতে হয়। ফলে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। এ ছাড়া রোগীর স্বজনরাও সচেতন নন। তারাই হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা করছেন। এ কারণে মাছির আনাগোনা বাড়ছে। তবে মশা নেই বলে দাবি নার্সদের।

এদিকে গতকাল পর্যন্ত মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩১৯ রোগী ভর্তি ছিল। তাদের মধ্যে শিশু ২৬টি। এ হাসপাতালে গত ১ আগস্ট মিনারা (৩৫) নামে এক নারী এবং মিলন (৩০) নামে এক যুবক ২৭ জুলাই ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। একজন সিনিয়র স্টাফ নার্স জানান, চার থেকে পাঁচজন নার্সের কাজ করতে হয় এক থেকে দুইজনকে। ফলে রোগীদের সঠিক সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

Comment here