কূটনৈতিক প্রতিবেদক : বাংলাদেশে কিছু সংখ্যক যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র আফগানিদের আশ্রয় দেওয়ার মার্কিন প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ। ওয়াশিংটনে ও বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব দেওয়া হলে বিনয়ের সঙ্গে বাংলাদেশ প্রত্যাখ্যান করে এবং জানায়, এ বিষয়ে কিছু করা সম্ভব না। আজ সোমবার রাতে রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন আমাদের সময়কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রথমে ওয়াশিংটনে আমাদের রাষ্ট্রদূতের কাছে এবং পরে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিছু আফগান নাগরিককে সাময়িকভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ার অনুরোধ জানায়। যুক্তরাষ্ট্র এ সময় জানায় তারা বাংলাদেশসহ কিছু বন্ধু দেশকে এ অনুরোধ জানিয়েছে। এরপর আমরা জানতে চেয়েছিলাম কোন কোন দেশকে তারা এ অনুরোধ জানিয়েছে। আফগানিস্তানের কী পরিমাণ নাগরিককে কত দিনের জন্য রাখতে হবে। এসব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এমনিতেই ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ সমস্যা আছে। নতুন করে কোনো দেশের লোকজনকে আশ্রয় দেওয়ার কোনো সুযোগ বাংলাদেশের নেই। তাদের বলেছি, আমাদের নতুন করে সমস্যা ফেলবেন না। আফগানিস্তানের লোকজনকে এদেশে আশ্রয় দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবটি তাই আমরা নাকচ করে দিয়েছি।’
এর আগে আজ সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আফগানিস্তানে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও জণগণের মতামতকে প্রাধান্য দেবে এমন সরকার চায় বাংলাদেশ।’
পুরো আফগানিস্তান এখন তালেবানদের। আশরাফ গনির দেশ ছাড়ার মাধ্যমে, যুদ্ধ শেষ হয়েছে বলে দাবি করেছে তালেবান। চলছে নতুন সরকার গঠনের প্রস্তুতি। তালেবানের সঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তান। পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেয়েছে আফগানরা। তবে সমর্থন দেবে না যুক্তরাজ্য।
ওদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘আফগানিস্তান ফের সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি হোক এটি কেউই চায় না। এ মুহূর্তে পশ্চিমাদেশগুলোকে তালেবানের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনোভাবেই তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া যাবে না।’
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনইং বলেন, ‘যুদ্ধ সমাপ্তির ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। দেশটির জনগণও আর যুদ্ধ চায় না। সুষ্ঠুভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর আর শান্তি প্রতিষ্ঠায় আফগানিস্তানের পাশে থাকবে চীন।’
আফগানিস্তানে রুশ রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি জোরোনভ বলেন, ‘তালেবানরা কথা দিয়েছে বিদেশি দূতাবাস কিংবা নাগরিকদের কোনো ক্ষতি করবে না তারা। তাই আগের মতোই দূতাবাসের কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে রাশিয়া।’
Comment here