মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা, ১০ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা, ১০ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে হামলা, মারধর, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনায় ১০ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের প্রত্যাহার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন চকরিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কাজী মো. মতিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘সন্ধ্যার দিকে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সবাইকে শান্ত থাকার জন্য বলেছি। এ ঘটনার সাথে জড়িত এসআই ও এএসআইসহ পুলিশের ১০ সদস্যকে জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের পর দোষী প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রত্যাহারকৃতরা হলেন-উপপরিদর্শক (এসআই) কামরুল ইসলাস, এসআই মিজান, এসআই তুষ্ট লাল বিশ্বাস, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) জেড রহমান ও ছয়জন কনস্টেবল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১ মার্চ রাত ৯টার দিকে চকরিয়া পৌরশহরের ওসান সিটি মাকের্টে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালান মো. সাগর নামের এক যুবক। ওই হামলায় দুইজন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ সাগরকে আটক করতে অভিযানে নামে। এর জেরে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের মাঝির পাড়ার আবুল কালামের বাড়িতে তার ছেলে সাগরকে ধরতে অভিযানে যায় একদল পুলিশ। ওই সময় অভিযানিক দল সাগরকে আটক করতে চাইলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় সাগর ও তার পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনায় পুলিশের তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান দাবি করেন।

মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর স্ত্রী ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নেচারা বেগম অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া থানার এসআই কামরুল ইসলাম, তুষ্ট লাল বিশ্বাস, মিজান ও এএসআই জেড রহমানের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জনের পুলিশের একটি দল তিনটি গাড়িতে করে সাগরের বাড়ির সামনে যান। সেখানে গাড়িগুলো রেখে পুলিশ সদস্যরা প্রায় ৫০ গজ দূরে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর বাড়িতে ঢুকে তাণ্ডব চালান। এ সময় তারা মুক্তিযোদ্ধার বাড়ির ভেতরের প্রতিটি কক্ষে ভাঙচুর ও মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, ছেলে, পুত্র বধু ও নাতি-নাতনিদের মারধর শুরু করেন।

নেচারা বেগম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করে একদল পুলিশ আমার বাড়িতে ঢুকে। এ সময় আমরা কিছু বুঝে উঠার আগেই আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার এবং প্রতিটি রুমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এক পর্যায়ে তারা আমার ছোট ছেলে ও পুত্রবধূকে মারধর করতে থাকে। আমি পুলিশকে বাধা দিতে গেলে তারা আমার চুলের মুঠি ধরে মাটিতে টানা-হেচড়া করে।’

মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বাঙ্গালীর ছেলে এম কে মো. মিরাজ বলেন, ‘স্থানীয় চেয়ারম্যান ও জামায়াত নেতা কাইছারের ইন্ধনে পুলিশরা আমার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, মারধরে আহত করে। এ সময় বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার খোয়া যায়। তবে এসব কে নিয়েছে আমি জানি না। আমার মা দেখলে চিনবে। এ ঘটনার ব্যাপারে আমি কোনো আপোষ করব না। অবশ্যই যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আসামি ধরতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে ডিপার্টমেন্টাল তদন্ত শুরু হয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই  ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comment here