যে কারণে ভিয়েতনামে করোনায় মৃত্যু শূন্য ও আক্রান্ত কম - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
আন্তর্জাতিক

যে কারণে ভিয়েতনামে করোনায় মৃত্যু শূন্য ও আক্রান্ত কম

অনলাইন ডেস্ক : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে ভিয়েতনামে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি মারা যায়নি। গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি এমন তথ্যই জানিয়েছে। তবে ভিয়েতনাম কী করে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে রেখেছে এবং আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু শূন্যের কোটায় ধরে রেখেছে-সেটাই অবাক করার বিষয়।

গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, ভিয়েতনাম সরকারিভাবে স্বাস্থ্য খাতের বিনিয়োগ ও রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করার কর্মসূচি বহুদিন ধরে চর্চা করে আসছে। আর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সেটিই বড় ঢাল হিসেবে কাজ করেছে। তবে করোনাভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার আগেই ভিয়েতনাম গোটা দেশ লকডাউন করে রেখেছে। এতে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়েছে।

ভিয়েতনাম ব্রিফিং অনলাইন নিউজ পোর্টাল জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ভিয়েতনামে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫১।দেশটিতে এই রোগে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। দেশটিতে ইতিমধ্যে ভাইরাস থেকে সুস্থ হয়েছেন ১২২ জন।

আনুষ্ঠানিকভাবে ২৩ জানুয়ারি প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের খবর প্রকাশের পর ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভিয়েতনামে রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৪ জনে। এর মধ্যে ২ জন চীনা নাগরিক। আর বাকি সবাই ভিয়েতনামী।

ব্যাপক আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে তখনই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় সরকার। পাশাপাশি করোনাভাইরাস নিয়ে ব্যাপক আকারে প্রচার করে সাধারণ মানুষের মধ্যে। কীভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, কী করলে সুস্থ থাকবে, এটাই ছিল প্রচারের মূল্য বক্তব্য। এসবের পাশাপাশি দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের খুঁজে খুঁজে বের করে পরীক্ষা করেছে।

তবে গত ২ মার্চ দেশটির একজন নারী ব্যবসায়ী ইউরোপের তিনটি দেশ ঘুরে ভিয়েতনামের হ্যানয় বিমানবন্দরের দায়িত্বরত কর্মচারীদের পরীক্ষা ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়েন দেশে। তবে পুলিশ তাকে ঠিকই আটক করে। পরে জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত।

এরপর ওই নারী যে বিমানে এসেছিলেন, তার সব যাত্রীকে কোয়ারেন্টিনে রাখেন দেশটির সরকার। তিনি যে রাস্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, সেই রাস্তা জীবাণুমুক্ত করা হয়, সেই পথের ধারে বাস করা প্রত্যেককে পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু এত সব করার পরও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫১ জনে।

ভিয়েতনামের স্বাস্থ্য বিভাগ মনে করে, যদি ইউরোপফেরত নারী যাত্রী বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ফাঁকি না দিতেন, তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা এত বাড়ত না। কারণ, তিনি যেসব স্থানে গেছেন, সেখানের সবাইকে পরীক্ষার মধ্যে আনলেও সবকিছু ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি।

তবে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানের তুলনায় ভিয়েতনাম এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যা করেছে, তা সারা দুনিয়ার জন্য অনুকরণীয়।

সূত্র : দ্য ডিপ্লোম্যাট ও জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইট।

Comment here