মোঃ মাসুম রেজা (পলাশ) রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও কেবল প্রয়োজনীয় জায়গা নিশ্চিত না হওয়ায় আটকে আছে দেশের সবচেয়ে বড় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের নির্মাণকাজ। সাড়ে চার মাস আগে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনও করেছে সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু এখন জমি বরাদ্দ নিয়ে বেঁকে বসেছে জেলা পরিষদ। ফলে বিপাকে পড়েছে সিটি কর্পোরেশন।
গেল বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহী নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ের দক্ষিণ পাশে জেলা পরিষদের জায়গায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে হাত দেয় সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচনের পর সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছিলেন, ‘নির্মাণ কাজ শেষে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে ম্যুরালটির উদ্বোধন করব আমরা। এই কাজটি করতে পেরে নিজেকে অনেকখানি হালকা মনে হচ্ছে আমার’।
জানা গেছে, ফলক উন্মোচনের পর জায়গার প্রশ্নে বেঁকে বসেছে জেলা পরিষদ। তারা বলছে, অনেক আগেই ওই স্থানের ১৯ শতাংশ জায়গা সিটি কর্পোরেশন ব্যবহার করে আসছিল। কথা ছিল, ওই জায়গাটুকুর মধ্যেই তারা বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করবে। কিন্তু এখন সিটি কর্পোরেশন আরো ৪২ শতাংশ জায়গা চায়। বাড়তি জায়গা দিতে হলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের সীমানাপ্রাচীর ভাঙতে হবে। তাছাড়া ওই স্থানের পাশেই আধুনিক ডাকবাংলো নির্মাণ করতে চায় জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। তাই নতুন করে বাড়তি জায়গা দিতে চায় না তারা।
রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, ‘রাজশাহীতে আমরাই প্রথম বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করেছি। সিটি কর্পোরেশন আরেকটি ম্যুরাল নির্মাণ করতে চাইলে কেউ বাধা দেবে না। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন আরো জায়গা চায় জেলা পরিষদের কাছে। তাদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা গত ২৪ ডিসেম্বর মিটিং করেছিলাম। মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে জায়গাটুকু তারা আগে থেকেই ব্যবহার করছিল সেখানেই ম্যুরাল করলে কোন সমস্যা নেই। বাড়তি জায়গা দিতে হলে আমাদের নিজস্ব স্থাপনার ক্ষতি হবে’।
এদিকে জায়গা নিয়ে এই সংকট দেখা দেয়ায় কিছুদিন আগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে ডিও লেটার দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ১০ কর্মদিবসের মধ্যে জেলা পরিষদের কাছে মতামত তলব করেছে। এরইমধ্যে নিজেদের মতামত মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে জেলা পরিষদ।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক জানান, ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি প্রয়োজনীয় জমি বরাদ্দসহ সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপরও নতুন করে এখন কেন এই সংকট তৈরি হচ্ছে তা বোধগম্য নয় আমাদের।
তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে অবগত রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসলেই পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে। তবে এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণকাজের জন্য টেন্ডার ও নকশা বাছাই শেষ হয়েছে। এখন প্রকল্পের কাজ শুরু করার অপেক্ষায় সিটি কর্পোরেশন।
Comment here