মোঃআলাউদ্দীন মন্ডল : করোনাভাইরাস ঠেকাতে রাজশাহীতে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষের সংখ্যা কমেছে। কোয়ারেন্টিনে থাকা হাজারের বেশী প্রবাসীকে সুস্থ্য বলে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। আর ল্যাব স্থাপনের পর এখন পর্যন্ত রাজশাহী বা বিভাগের আট জেলায় কোনো করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়নি। রাজশাহী বিভাগের আট জেলা থেকে সংগ্রহ করা নমুনা এই ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
তবে রাজশাহীতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ নেয় বা পাওয়া যাবে না তা ভাবার কোন কারণ নেয় বলে মন্তব্য চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের অন্য জেলার মত রাজশাহীও ঝুঁকির বাইরে নেই। মানুষ ঘরবন্দি না থাকলে যে কোন মুহুর্তে রাজশাহীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে প্রাণঘাতি এই ভাইরাস। কারণ আশপাশের জেলা থেকে রাজশাহীতে আসা যাওয়া এখনো পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
এই অবস্থায় রাজশাহীকে পুরোপুরি লকডাউন করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। যদিও গত ৬ এপ্রিল থেকে রাজশাহীর প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাজশাহী শহরে ওইদিন থেকে কেউ ঢুকতে পারছেন না। আবার কাউকে বের হতেও দেওয়া হচ্ছে না। এর পরও শুক্রবার ফরিদপুর থেকে এক ব্যক্তি রাজশাহী চলে এসেছেন। রাতে খবর পেয়ে প্রশাসন ওই বাড়ি লকডাউন করে দেয়।এই ছাড়া অন্যান্য থানা এলাকায় যেমন পুঠিয়ায় ঢাকা,নারায়ণগঞ্জ গার্মেন্টস কর্মী এখনও রাজশাহীতে ঢুকছেন।নেই প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ।
এছাড়া সকল প্রকার দোকানপাট সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ
(আরএমপি)। তবে সকল প্রকার ওষুধের দোকান-ফার্মেসিসহ জরুরি সেবা সংক্রান্ত সকল প্রতিষ্ঠান এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৫ জনসহ বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫৫ জন। তারা বিদেশ ফেরত ব্যক্তি ও তাদের স্বজন। আর রাজশাহীতে এ পর্যন্ত এক হাজার ১২২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনের আওতায় আনা হয়েছে।
প্রত্যেকে ১৪ দিন শেষে এখন পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিন থেকে মোট এক হাজার ৬৭ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন মাত্র ৫৫ জন। তবে এখন পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনে কেউ নেই। এছাড়া শুক্রবার পর্যন্ত জেলায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। কিন্তু এরপরও রাজশাহী করোনাভাইরাসের ঝুঁকির বাইরে নেই বলে মন্তব্য করেন চিকিৎসকরা।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাজশাহীতে ১০টি সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রের ১১৫টি বেড করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছে। ১৬ জন ডাক্তার ও ১৩ জন নার্স করোনা চিকিৎসায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছেন। দুই হাজার ২০ সেট ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) এবং প্রয়োজনীয় জরুরি ওষুধ মজুদ রয়েছে। ইতোমধ্যে এক হাজার ১৭ সেট পিপিই বিতরণ করা হয়েছে।
এছাড়া রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত জেলার ৭৩ হাজার ৮০৪টি পরিবারে ৬৫৫ দশমিক ২৩০ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী এবং ১৪ লাখ ২০ হাজার নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আরও ৫২৪ দশমিক ৩০০ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী ও ২৬ লাখ ৭৫ হাজার নগদ অর্থ মজুদ রয়েছে।
Comment here