রাতে স্থগিত বুয়েটের আন্দোলন, দাবিতে পরিবর্তন আসছে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
শিক্ষাঙ্গন

রাতে স্থগিত বুয়েটের আন্দোলন, দাবিতে পরিবর্তন আসছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে করা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আজ মঙ্গলবার রাতের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।

আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। তবে দাবি–দাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আসবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, রাতের মতো তারা আর অবস্থান–বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন না। আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় তারা আবার জড়ো হবেন।

তারা আরও জানিয়েছেন, উপাচার্য তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সঠিক জবাব দেননি। এ জন্য তাদের দাবি–দাওয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আসবে। যা আগামীকাল জানানো হবে। আপাতত তারা উপাচার্যের কার্যালয়ের তালা খুলে দিচ্ছেন।

এ সময় প্রায় চার ঘণ্টা পর তালা খুলে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে দেওয়া হয় উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে।

এর আগে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ৪৮ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার পরে প্রকাশ্যে আসেন উপাচার্য। এ সময় শিক্ষার্থীরা জানতে চান, দুদিন ধরে তিনি কোথায় ছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো জবাব না দিয়ে সরাসরি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। মাইক দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আবরারের মৃত্যু হয়েছে।’

উপাচার্যের এমন মন্তব্য শুনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরে তারা আবরারের মৃত্যু নয় তার খুন হয়েছে বলে চিৎকার শুরু করলে উপাচার্য বলেন, ‘ঠিক আছে খুনই হয়েছে। ঘটনার পর থেকে আমি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। পাঁচ থেকে ছয়জনকে নিয়ে বসেছি। সবতো আমার হাতে নেই, যেগুলো আমার হাতে আছে সেগুলো আমি করছি। নীতিগতভাবে তোমাদের পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। সারা দিন মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তোমরা অধৈর্য হবে না।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির বিষয়ে সিন্ধান্ত না দিয়ে উপাচার্যকে ক্যাম্পাস না ছাড়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির বিষয়ে অনড় ও প্রশাষণের সিন্ধান্ত জানতে চাইলে অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তো কোনো অন্যায় করিনি।’ এ কথা শোনার পর উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে।

এর আগে বিকেল ৫টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে বুয়েটের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। তাদের বেধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উপাচার্য সশরীরে শিক্ষার্থীদের সামনে না আসায় শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে ওই তালা ঝোলান।

গত রোববার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের নিচতলা থেকে আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সোমবার রাতে ১৯ জনকে আসামি করে তার বাবা বরকত উল্লাহ ঢাকার চকবাজার থানায় মামলা করেন।মামলাটির তদন্ত করতে ডিবিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ১০ ছাত্রলীগ নেতার পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন, গ্রন্থনা ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্না, মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মুজাহিদুর রহমান ও মেহেদী হাসান রবিন।

এ ছাড়া আবরার হত্যায় এজাহারভুক্ত আরও তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।  তারা হলেন-মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শামসুল আরেফিন রাফাত (২১), ওয়াটার রির্সোসেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মনিরুজ্জামান মনির (২১) ও একই ব্যাচের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আকাশ হোসেন (২১)।

Comment here