রাস্তা কাটল দুর্বৃত্তরা, সংঘাতের আশঙ্কা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

রাস্তা কাটল দুর্বৃত্তরা, সংঘাতের আশঙ্কা

জয়ন্ত সাহা যতন : মিঠাপুকুর উপজেলায় দুই গ্রামের মানুষ চলাচলের জন্য একমাত্র রাস্তাটি রাতের আঁধারে কেটে দিয়েছে দূর্বৃত্তরা। রাস্তাটির প্রায় ৫০ মিটার সম্পূর্ণ কেটে জমিতে বিলীন করা হয়।
এতে ওই এলাকার অন্তত শতাধিক পরিবারের কয়েক শ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। বাধ্য হয়ে বিকল্প পথে চলাচল করছে এলাকাবাসী। রবিবার সকালে ঘটনাটি উপজেলার ইমাদপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর আকন্দ পাড়া গ্রামে ঘটে। এ ঘটনায় রাস্তাটি নির্মাণ করতে গিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে এলাকাবাসী। বর্তমানে ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।এলাকাবাসী জানায়, একবছর আগে ওই গ্রামের আহাম্মদ আলীর ছেলে কাইয়ুম আলীর কাছে ১৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন একই গ্রামের এন্তাজ মন্ডলের ছেলে জাকারিয়া মন্ডল।
পরে ওয়ারিশ দাবি করে জমি ক্রয়ের সমুদয় টাকা দাখিল করেন কাইয়ুমের চাচাতো ভাই আব্দুল মালেক। তিনি একই গ্রাগের সমসের আলীর ছেলে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন আছে।তবে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ওই জমিতে মাছ চাষ করে আসছে জাকারিয়া। আর রাস্তাটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তা মাটি ভরাট করে আরো প্রশস্থ করেন তিনি।কিন্তু গত ১ নভেম্বর রাতের আঁধারে একদল লোক সাথে নিয়ে রাস্তাটির প্রায় ৫০ মিটার সম্পূর্ণ মাটি কেটে জমিতে বিলীন করে দেন মালেক। এমনকি সেই রাস্তার মাঝে টয়লেট ও খড়ের স্তূপ তৈরি করেন তিনি। এতে পুরো রাস্তাটি দিয়ে একেবারে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তাটি দিয়ে চলাচলকারী শতাধিক পরিবারের কয়েক শ মানুষ চরম বিপাকে পড়ে। স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা হেঁটে পানি পার হচ্ছে। কেউ আবার বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে। ঘটনার পর ক্রয়কৃত জমির মালিক জাকারিয়া বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনজন আসামিকে আটক করে পুলিশ।এরপর স্থানীয় রাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তি সমাধানের আশ্বাস দেন। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও তা সমাধান না হওয়ায় এলাকাবাসী এক হয়ে রাস্তাটি মেরামত করতে যায়।ads
কিন্তু এলাকাবাসীকে বাধা দেয় মালেক ও তার লোকজন। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন মুখোমুখি অবস্থান নেয়। এতে এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।স্থানীয়রা বলছে, জমির মালিক যেই হোক রাস্তা কেটে ফেলা অন্যায়। কয়েকদিন থেকে আমরা রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করতে পারছি না। বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে পানি পার হচ্ছি। শত বছর ধরে রাস্তাটি দিয়ে মানুষ চলাচল করে আসছে। এর কারণে তারা চরম বিপাকে পড়েছে। তাদের দাবি, দ্রুত রাস্তাটি মেরামতের উদ্যাগ নিতে স্থানীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসার।এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মালেক বলেন, এ রাস্তাটি কোনো রেকর্ড করা নয়। আমার ইচ্ছে হয়েছে রাস্তা কেটে ফেলেছি। ক্রয়কৃত মালিক জাকারিয়া জানান, রাস্তাটি দিয়ে শত বছর ধরে মানুষ চলাচল করছে। তাই রাস্তার দুইধারে ১৫ ফিট প্রশস্থ করা হয়। তিনি (মালেক) জমি কিনতে না পেরে আমাদের রাস্তাটি কেটে দিয়েছেন।মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর বলেন, রাস্তা কেটে ফেলার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। তবে আজকের উত্তপ্ত পরিস্থিতির বিষয়ে আমার জানা নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, রাস্তা কেটে মানুষের যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটানো অন্যায়। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি, পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comment here