রেনু হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

রেনু হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

আদালত প্রতিবেদক : রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটিতে বাদী নিহত রেনুর ভাগ্নে নাসির উদ্দিন টিটু, আরেক ভাগ্নে আনিকুর রহমান এবং রেনুর সুরতহাল প্রস্তুতকারী পুলিশ কর্মকর্তা বাড্ডা থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা সাক্ষ্য দেন।

ওই আদালতের বিচারক ফাতিমা ইমরোজ ক্ষণিকা এদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আগামী ১১ জানুয়ারি পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেন। সাক্ষ্য গ্রহণকালে ১৩ আসামিই আদালতে হাজির ছিলেন। যারা সবাই জামিনে রয়েছেন। মামলায় এর আগে গত ১ এপ্রিল আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

আসামিরা হলেন- ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় মোল্লা, রিয়া বেগম ময়না, আবুল কালাম আজাদ, কামাল হোসেন, মো. শাহিন, বাচ্চু মিয়া, মো. বাপ্পি ওরফে শহিদুল ইসলাম, মুরাদ মিয়া, সোহেল রানা, আসাদুল ইসলাম, বেল্লাল মোল্লা, মো. রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন এবং মহিউদ্দিন।

মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আব্দুল হক গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর মহিউদ্দিনসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দাখিল করেন। মামলার অপর ২ আসামি জাফর হোসেন পাটোয়ারী ও ওয়াসিম আহমেদ অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের অংশের বিচার শিশু আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।

২০১৯ সালের ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডার কাঁচাবাজারের সামনে বাড্ডা প্রাইমারি স্কুলে সন্তান ভর্তি খোঁজখবর নিতে গিয়ে তাসলিমা বেগম রেনু ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত হন। ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাগনে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু। পরবর্তীতে বাদী বাড্ডা সরকারী প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমসহ প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষিাকা এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও আসামি চেয়ে আদালতে সম্পূরক এজাহার দাখিল করেন।

নিহত রেনুর ১১ বছরের একটি ছেলে এবং চার বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ঘটনার দিন মেয়ে তুবাকে ভর্তির খোঁজখবর নিতেই বাড্ডা প্রাইমারি স্কুলে গিয়েছিলেন রেনু। রেনু লেখাপড়া শেষে আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেন। স্কুলেও করেছেন শিক্ষকতা। প্রায় দুইবছর আগে স্বামী তসলিম হোসাইনের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এর পর থেকে মায়ের সঙ্গে মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটের একটি ভাড়া বাসায় ছেলে-মেয়ে নিয়ে বসবাস করছিলেন। ছেলেকে ছয় মাস আগে তার বাবা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা বড়ভাই মো. আজগার আলীর কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন রেনু।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়- ছেলেধরা বলে বাইরে থেকে হট্টগোল শুরু হলে তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যেই স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা উচ্ছৃঙ্খল মানুষে ভরে যায় জায়গাটি। এর পর হাতে গোনা কয়েকজন যুবক মাটিতে ফেলে নির্মমভাবে লাঠি দিয়ে পেটায় রেনুকে। কেউ কেউ এলোপাতাড়ি লাথিও মারছিল। শত শত মানুষ দর্শকের ভূমিকায় তা দেখছিল, কেউ আবার সেই মারধর মোবাইল ফোনে ভিডিও করছিল।

Comment here