লক্ষণ ছিল না, তবু হাসপাতাল কর্মচারীর করোনাভাইরাস শনাক্ত! - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

লক্ষণ ছিল না, তবু হাসপাতাল কর্মচারীর করোনাভাইরাস শনাক্ত!

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) প্রতিনিধি : শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক (৩৫) গত বৃহস্পতিবার রাতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে বুধবার সকালে ওই চালকের দেহ থেকে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

নমুনা সংগ্রহের পরেও ওই চালককে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা না দিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালিয়ে অন্য রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। একই সঙ্গে ওই চালক তার স্বাভাবিক চলা ফেরাও করেন। ওই চালক করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবরটি ছড়িয়ে পড়ায় তার সংর্স্পশে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

অ্যাম্বুলেন্স চালকের নমুনা সংগ্রহের পরেও তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা না দিয়ে তাকে দিয়ে আগের মত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মো. জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ ওঠেছে।

উপজেলা আইসিটি টেকনিশিয়ান মানিককুড়া গ্রামের বাসিন্দা জামান আহমেদ বলেন, ‘গত বুধবার দুপুরে ওই চালক ও চিকিৎসক আমাদের গ্রামের জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত এক রোগীর করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করতে আসেন। ওই চালকের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাতে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অবশ্যই বিষয়টি আতঙ্কের। চালকের নুমনা সংগ্রহের পরেও তাকে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালানো ঠিক হয়নি। এতে ইউএইচএফপিও তার দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেছেন।’

কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, ‘এ চালকের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার চাপাঝোড়া গ্রামে জ্বর ও শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া শিশুর পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করতে যান।’ এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে ইউএইচএফপিও মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন নমুনা পাঠানো বাধ্যতামূলক, বুধবার রোগী না পাওয়ায় আমাদের নিজেদের মধ্যে থেকে ওইদিন সুস্থ থাকার পরেও চালকের নমুনা পাঠানো হয়। কিন্তু তার দেহে কাকতালিয়ভাবে করোনা “পজিটিভ” হয়ে গেল। অথচ তার দেহে করোনার কোনো উপসর্গ ছিল না। তাই তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘এটা ভুল রির্পোটও হতে পারে। এ ঘটনায় আমি নিজেও আতঙ্কিত। আপনি হয়তো জানেন গণপরিবহন বন্ধ থাকায় আমাকে জেলা শহর থেকে একবার নিয়ে আসে আবার দিয়ে আসেন তিনি। আমি বুধবার ও বৃহস্পতিবার অ্যাম্বুলেন্স যোগে তার পাশের সিটে বসে যাতায়াত করেছি। উপসর্গ থাকলে আমি অবশ্যই তার সঙ্গে যাতায়াত করতাম না। বর্তমানে চালক সুস্থ আছেন এবং তার কোয়াটারের হোম কোয়ারেন্টিনে আছে।’

‘আগামীকাল শনিবার তার নমুনা পুনরায় এবং আমাদের সকলের নমুনা পাঠানো হবে। পরর্বতীতে রির্পোট দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’, যোগ করেন জসিম উদ্দিন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. একেএম আনওয়ারুর রউফ দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তির দেহ থেকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তাহলে রির্পোট আসা পর্যন্ত তাকে অবশ্যই হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার নির্দেশনা আমাদের। এ নির্দেশনার ব্যতই ঘটলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে প্রমাণ পেলে কালকেই (শনিবার) ব্যবস্থা নিবো।’

Comment here