শিক্ষার্থী মুন্নীকে ভুল ইনজেকশন,মানববন্ধন শিক্ষার্থীরা(বশেমুরবিপ্রবি) - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষার্থী মুন্নীকে ভুল ইনজেকশন,মানববন্ধন শিক্ষার্থীরা(বশেমুরবিপ্রবি)

সুকান্ত সরকার বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মুন্নীকে ভুল ইনজেকশন প্রদানকারী নার্স শাহানাজ এবং কর্তব্যরত চিকিৎসক তপন কুমার মন্ডলের স্থায়ী চাকরিচ্যুতি সহ চারদফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ১ টা গোপালগন্জ জেলা প্রেসক্লাবের সামনে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি চারটি হলোঃ

১. ইনজেকশন প্রদানকারী নার্স শাহানাজ এবং ওই সময়ে কর্তব্যরত ডাক্তার তপন কুমার মন্ডলকে আজীবনের জন্য চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২. মুন্নীর যাবতীয় চিকিৎসা খরচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বহন করতে হবে এবং ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ৩. এ ঘটনাকে “স্বাভাবিক ঘটনা” বলা ডাক্তারকে সকলের সামনে ক্ষমা চাইতে হবে। ৪. ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটবে না সেই নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তাদের ৪ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য ৪৮ ঘন্টার সময়সীমা দিয়েছেন এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে গোপালগন্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি স্মারকলিপিও প্রদান করে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম জানান, “নার্সের ভুল ইনজেকশনে আমাদের ছোটো বোন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।

আমরা এই ঘটনার বিচার সহ চারদফা দাবিতে আজ মানববন্ধন করছি এবং আমাদের দাবি সমূহ মেনে নেয়া না হলে পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হবো”। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী আরেক শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ফাতেমা ইয়াসমিন বলেন, “গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলা একটি সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে। আজকে শুধুমাত্র তাদের অবহেলার কারণে আমাদের বোন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে অথচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে এমনটি নাকি ঘটতেই পারে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে আমরা লজ্জিত। আমরা প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই”। এদিকে ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও জ্ঞান ফেরেনি মুন্নীর। বর্তমানে সে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মুন্নীর সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তার বড় ভাই হাসিবুল হাসান রুবেল জানিয়েছেন, মুন্নীর অবস্থার কোনো পরিবর্তন ঘটেনি, ডাক্তাররা বলেছেন ৭২ ঘন্টার আগে কিছুই বলা যাবেনা” উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে পিত্ত থলির পাথর অপারেশন করাতে ডা. তপন কুমার মণ্ডলের অধীনে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন মুন্নী। চিকিৎসাধীন অবস্থায় নার্স শাহানাজ ভুলবশত গ্যাসের ইনজেকশনের পরিবর্তে অ্যানেসথেসিয়ার ইনজেকশন পুশ করলে সে অজ্ঞান হয়ে যায় এবং তার অবস্থার অবনতি ঘটলে প্রথমে খুলনায় আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় মুন্নীর চাচা বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এছাড়া হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষও উক্ত ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এবং কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে।

Comment here