সংবাদপত্রশিল্পকে রক্ষায় এগিয়ে আসুন : ফখরুল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

সংবাদপত্রশিল্পকে রক্ষায় এগিয়ে আসুন : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংবাদপত্রশিল্পকে রক্ষার জন্য গণতন্ত্রকামী মানুষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ রোববার এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে সংবাদপত্রশিল্পকে রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন ‘নিউজ পেপারস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (নোয়াব)-এর দাবির প্রতি তিনি সংহতি প্রকাশ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে রুগ্ন সংবাদপত্র শিল্প আরও ভয়াবহভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশে করোনা মহামারি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় সংবাদপত্রের বিক্রির সংখ্যা, বিজ্ঞাপন আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। রাজধানীসহ সারা দেশে অনেক সংবাদপত্র প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক পত্রিকা তাদের কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে পারছে না এবং প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংবাদকর্মী চাকরি হারাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘পত্রিকাগুলো নিজেদের টিকিয়ে রাখতে অত্যন্ত জোরেসোরে ব্যয় সংকোচনের নীতি গ্রহণ করেছে। চাকরি হারিয়ে কিংবা ক্রমাগত আয় কমে যাওয়ায় পত্রিকার নিরুপায় কর্মীরা দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। এই মহামারির বিষন্ন পরিস্থিতিতে বিকল্প আয়েরও কোনো সুযোগ নেই। ইতিমধ্যে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেছেন। এখনো অনেকেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সংবাদপত্রশিল্পের সংকটের কারণে করোনা আক্রান্ত সংবাদকর্মীরা নিজেদের চিকিৎসা ব্যয়ও নির্বাহ করতে পারছেন না। সংবাদপত্রশিল্পের কর্মীরা এখন এক ঘোর দুর্দিন অতিক্রম করছে। যদিও শ্রম আইন অনুসারে সংবাদপত্রশিল্পকে সেবাশিল্প হিসেবে ঘোষনা করা হয় তবুও এই শিল্প সরকারের তরফ থেকে কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। বর্তমান বিশ্ব মহামারির প্রভাবে সংবাদপত্রশিল্পকে রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন ‘নিউজ পেপারস ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’’ (নোয়াব) যে দাবি উত্থাপন করেছে বিএনপি সেই দাবির প্রতি সংহতি ঘোষণা করছে। ইতিমধ্যে ‘নোয়াব’ এর নেতৃবৃন্দ তথ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করার সময় মন্ত্রীদের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হলেও কার্যত এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কিছুই ঘটেনি।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে এই খাতকে ধ্বংস করতে চায়। কোভিড-১৯ এর আগ্রাসনে থমকে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে রুগ্ন সংবাদপত্রশিল্প এখন মুমূর্ষু অবস্থায়। এই শিল্প এখন খাদের কিনারে। করোনার এই সংকটকালে অন্যান্য দু-একটি শিল্পকে কিছু প্রণোদনা দেওয়া হলেও সংবাদপত্রশিল্পের প্রতি সরকার একেবারেই ভ্রুক্ষেপহীন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংবাদপত্রশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শুল্ক ও ভ্যাট ‘‘নোয়াব’’-এর দাবি অনুযায়ী নির্ধারণ করার জন্য আমি জোর আহ্বান জানাচ্ছি। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরী। সহজ শর্তে ঋণ ও প্রণোদনা প্রদান এবং সরকারের কাছে পাওনা বিপুল পরিমাণ বিজ্ঞাপনের বিল দ্রুত পরিশোধের মাধ্যমে এই মূহূর্তে সংবাদপত্রশিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, ‘‘নোয়াব’’ ইতিমধ্যেই যেটির আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া নেই। সংবাদপত্রের প্রতি বর্তমান সরকার সবসময় বৈরী মনোভাব পোষণ করে। হয়তো সেজন্যই সরকার সংবাদপত্রশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের দাবি শুনেও না শোনার ভান করছে।’

Comment here