সমঝোতার বিচ্ছেদে লাভবান হবে বিএনপি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

সমঝোতার বিচ্ছেদে লাভবান হবে বিএনপি

নুরুল আমীন বেপারী রাজনৈতিক বিশ্লেষক : বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট থেকে অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামের বিচ্ছেদকে সমঝোতার বলে অভিহিত করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নুরুল আমীন বেপারী। এ ছাড়া এই বিচ্ছেদে বিএনপি লাভবান হবে বলে মনে করেন তিনি। তবে ক্ষমতাসীনরা আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে কোনো এক প্রক্রিয়ায় এনে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে বলেও মত তার।

‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে তাড়ানোর জন্য বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আনার বিশেষ করে মাগুরা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করল। বলা হয়ে থাকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফর্মুলা জামায়াতের আমদানি করা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের সম্পর্ক বেশিদিন থাকল না। আবার বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হলো। এ সময় থেকে বিএনপির ওপর পশ্চিমা চাপ ছিল জামায়াতকে ছাড়ার। যেভাবেই হোক বিএনপি জামায়াতকে ছাড়তে পারেনি। মনে করেছে, তারা হেরে যাবে। আওয়ামী লীগ জামায়াতকে লুফে নেবে।

‘আজকের পরবর্তী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। যদি নিরপক্ষে নির্বাচন হয়, তা হলে আওয়ামী লীগই জামায়াতকে কাছে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। বলবে, আমরা তোমাদের যেভাবে ব্যবহার করেছি, সেটি ভুলে যাও। এমনকি তোমাদের পার্টি জামায়াতকে আমরা রাজনীতি করার সুযোগ দেব। এটি অসম্ভব কিছু না। অন্যদিকে জামায়াত যদি মনে করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলনে যাবে সেটিও ঘটতে পারে। বিএনপি সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে যাওয়ার কথা বলছে না। বলছে যুগপৎ আন্দোলনের কথা।

 

 

‘বিএনপির মধ্যে বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বিরাট একটা প্রেসার আছে যে জামায়াতের সঙ্গে তারা একই মঞ্চে আর বক্তব্য দেবে না। বিএনপির হাইকমান্ড থেকে মনে হয় একই সিদ্ধান্ত। কিন্তু বিএনপি ঘোষণা দিতে চায়নি। বিএনপি চেয়েছে জামায়াত ঘোষণা দিক। ফলশ্রুতিতে আজকের যে ঘটনা ঘটল তা বিএনপির জন্য ভালো হয়েছে। বিএনপির জন্য কেন ভালো হয়েছে, কারণ জামায়াত বলেছে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে আর আন্দোলন করবে না। যুগপৎ আন্দোলন করবে। ১৪ বছরের দমননীতির পরও সারাদেশে বিএনপির লাখ লাখ সমর্থক সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়েছে। নির্যাতন যত বেশি হবে মানুষ তত রাগান্বিত হবে। বিএনপি চায় একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন। এ নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে গিয়ে জামায়াত যদি ভিন্নভাবে নির্বাচন করতে পারে। কীভাবে বর্তমান সরকার মনে করতে পারে তিনশ আসনে জামায়াতে প্রার্থী দাঁড় করালে বিএনপির ভোট কাটবে।

এর আগেও একটা নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯১ সালে। সেখানে ভিন্নভাবে অংশ নিয়ে জামায়াত তিনটি আসন পেয়েছিল। বিএনপির সঙ্গে একসঙ্গে নির্বাচন করলে বিএনপিকে অনেক আসন ছাড়তে হয়। সঙ্গে জামায়াতের অতীতের খারাপ কর্মকা-ের সমালোচনায় পড়তে হয়। ফলে এখন বিএনপি নিজের মতো করে কর্মসূচি পালন করতে পারবে। এতে বিএনপির জনপ্রিয়তা বাড়াবে।

 

Comment here