সাত বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক লাউঞ্জ হচ্ছে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

সাত বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক লাউঞ্জ হচ্ছে

গোলাম সাত্তার রনি  : ঢাকার হযরত শাহজালাল, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আর সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ চারটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরে যাত্রী হয়রানি বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সেবার মান বাড়াতে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। সবকটি বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক যাত্রী লাউঞ্জ তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নে গত ২৮ জুলাই বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ১৪ জুলাইয়ের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিমানবন্দরে আগমন-বহির্গমনে আলাদা লাউঞ্জ প্রবর্তনের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান। মন্ত্রণালয় বলছে, বিমানবন্দরগুলোর আগমন-বহির্গমনে যাত্রী লাউঞ্জ নির্মাণে অনেক আগেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু নির্মাণকাজ শুরু করতে পারেনি বেবিচক। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অভ্যন্তরীণ রুটে বিদেশি যাত্রী, ভিআইপি যাত্রী যাওয়া-আসা করছেন। প্রতিটি বিমানবন্দর থেকেই যাত্রী হয়রানির অভিযোগ আসছে।

এ অবস্থায় সবকটি বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক লাউঞ্জ নির্মাণে সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। তবে বেবিচক বলছে, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অত্যাধুনিক লাউঞ্জ নির্মাণসহ নিরাপত্তাব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে চায়। এর অংশ হিসেবে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সদস্য (অপারেশন ও পরিকল্পনা)

এয়ার কমডোর খালিদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। তবে সরকারের নির্দেশনা এবং যাত্রীদের সুবিধার্থে বেবিচকের পক্ষ থেকে বেশকিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বেবিচকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাও ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অত্যাধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জামও আনা হবে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে অত্যাধুনিক যাত্রী লাউঞ্জ করার পরিকল্পনা আছে। সে জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। গত কয়েক মাসে শাহজালালে যে কটি ঘটনা ঘটে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। নিরাপত্তার ব্যাপারে কারও সঙ্গে কোনো ধরনের আপস করছি না।

বেবিচক সূত্র জানায়, ১৯৭২ সালের ৭ মার্চ সিলেট ও চট্টগ্রামে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্য দিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমানের যাত্রা শুরু হয়। একই বছর ৪ মার্চ ঢাকা-লন্ডন ফ্লাইট শুরু হয়। এর পর দেশ-বিদেশে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়লেও যাত্রীসেবার মান বাড়েনি। এরই মধ্যে গত দশ বছরে দেশের সবকটি বিমানবন্দরকে উন্নতভাবে গড়ে তোলার নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কাক্সিক্ষত ফল আসেনি। বিশেষ করে শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে আসা-যাওয়া যাত্রীদের সেবার মান নিয়ে প্রায় অভিযোগ আসে। এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো না। বিমানবন্দরগুলোয় উন্নতমানের যাত্রী লাউঞ্জ নেই।

এসব দিক বিবেচনা করে বছরখানেক আগে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ পরিচালনায় নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নয়নে ৬০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয় কর্তৃপক্ষ। ওই প্রকল্পে প্রয়োজনীয় আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সম্প্রতি নেওয়া হয় অত্যাধুনিক যাত্রী লাউঞ্জ করার পরিকল্পনা। তা ছাড়া উন্নয়নের আওতায় আনা হয় বিমানবন্দরের কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভিল্যান্স (সিএনএস) ব্যবস্থারও।

অভিযোগ আছে, দেশের সব বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিকের সংখ্যা বাড়লেও যাত্রী নিরাপত্তার জন্য যেসব যন্ত্রপাতি আছে, সেগুলোর অধিকাংশই পুরনো। এসব যন্ত্রপাতি ঠিকমতো সচল পাওয়া যায় না। এতে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের নিরাপদ সেবার ব্যাঘাত হচ্ছে।

বেবিচক বলছে, বিমানবন্দরের ট্রাফিক সেবার কার্যকারিতা বাড়ানোসহ নিরাপদ উড়োজাহাজ পরিবহন পরিচালনা, সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারে (সিএটিসি) এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের (এটিসি) জন্য প্রশিক্ষণ, উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা রোধে উদ্ধারকাজ ও অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া উড়োজাহাজ চলাচলের জন্য দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিয়ন কাভারেজের জন্য গভীর সমুদ্র পর্যন্ত সার্ভিল্যান্স এলাকা বিস্তৃত করতে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাও নতুন করে সাজানো হচ্ছে। চলতি বছরের শেষের দিকে টেন্ডার আহ্বান করা হতে পারে।

Comment here