নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তারের পর গতকাল রোববার আদালতে পাঠিয়েছিল পুলিশ। তবে তাকে কারাগারে যেতে হয়নি। আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। মামলার বাদী তার স্ত্রীই হয়েছেন জিম্মাদার। এখন স্ত্রী বলছেন, তিনি তাকে একটি সুযোগ দিতে চান।
শনিবার রাতে জাকির হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা জাহান বারী পুলিশের হেল্প লাইন ‘৯৯৯’ এ ফোন করে তাঁর ওপর নির্যাতনের কথা জানান। এরপরই জাকির হোসেনকে বেইলি রোডের সুপিরিয়র অফিসার্স কোয়ার্টারের বাসা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত সচিব জাকির হোসেন বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে আছেন।
নির্যাতনের শিকার জাকিরের স্ত্রী ফাতেমা জাহান বারী একজন চিকিৎসক। তিনি এক সময় পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রয়েছেন। শনিবার রমনা থানায় করা মামলায় ফাতেমা জাহান বারী উল্লেখ করেছিলেন, ২০১৮ সালের ১০ ডিসেম্বর তাদের বিয়ে হয়। পুলিশ হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় তিনি দ্বিতীয়বার জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যান। মিশন থেকে পাওয়া টাকার প্রতি জাকিরের লোভ জন্মে। তিনি ৭০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এই টাকা দিতে না চাইলে জাকির তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা শুরু করেন। গত দুই আগস্ট রাত তিনটার দিকে জাকির মারধর করলে তার বাম চোখের ভ্রুর ওপরে কেটে যায়। জখমের স্থানে তার আটটি কসমেটিকস সেলাই করতে হয়। রান্না ঘরের ক্যাবিনেটের দরজা খুলতে গিয়ে দরজার আঘাতে জখম হয়েছে এমনটা বলতে বলতে বাধ্য করেন জাকির।
মামলায় ফাতেমা জাহান বারী আরও উল্লেখ করেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ৩০ নভেম্বর আবারও যৌতুক দাবি করেন জাকির। তাকে প্রচণ্ড মারধর করে রক্তাক্ত করেন।
মামলা করে জামিনের জিম্মাদার হওয়ার বিষয়ে ফাতেমা জাহান বারী গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বাবা-মা তাকে বিয়ে দিয়েছিলেন। তারা এখন অসুস্থ। তাদের অনুরোধে তিনি স্বামীকে একটি সুযোগ দিতে চান। সে জন্যই জিম্মাদার হয়েছেন। ফাতেমা জাহান বারী বলেছেন, জাকিরকে তিনি ১৫-২০টি শর্ত দিয়েছেন। প্রতিটি শর্ত মেনে নেওয়ায় তিনি জিম্মাদার হয়েছেন। তবে মামলা তিনি প্রত্যাহার করবেন না বলে জানিয়েছেন।
Comment here