মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় তাহামিনা আক্তার নামের এক স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রেমিকের কাছে থাকা নগ্ন ছবি দিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করায় সে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করছে সহপাঠী ও স্বজনরা।
গতকাল শুক্রবার রাতে আত্মহত্যা করে তাহমিনা। সে উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের মধ্যরৌহা এলাকার মৃত খোরশেদ আলমের মেয়ে ছিল। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
তাহমিনার প্রেমিকের নাম মো. রেদুয়ান মিয়া। সে দরগ্রাম ভিকু মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাবা মো. মাসুদ মিয়া উপজেলার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর সহপাঠীদের বরাত দিয়ে তার মামা আবদুল সোবহান জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই রেদুয়ানের সঙ্গে তার ভাগনির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের জের ধরে জোর করে তাহমিনার কিছু নগ্ন ছবি নিয়েছিল রেদুয়ান। সম্প্রতি কোনো কারণে ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল শুরু করে রেদুয়ান। এ কারণে তাহমিনা আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন স্বজনরা।
ওই ছাত্রীর মামা জানান, গতকাল রাতে মায়ের সঙ্গে খাবার খেয়ে বারান্দায় পড়তে বসে তাহমিনা। পরে রাতে মেয়ের ঘরে গিয়ে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান মা। এ সময় পড়ার টেবিলে একটি চিরকুট উদ্ধার করেন তিনি।
চিরকুটটিতে লাল কলম দিয়ে লেখা হয়েছে- ‘আমি জানি আমি অনেকের সাথে খারাপ ব্যবহার করছি, তাই পারলে সবাই আমাকে মাফ করে দিয়েন।’
এ ছাড়া ইংরেজি অক্ষরে লেখা হয়েছে- ‘আই অ্যাম সরি, মাই ফ্যামিলি অ্যান্ড অল ফ্রেন্ডস, গুড বাই ফর এভার…’
সোবহান আরও জানান, তাহমিনার মোবাইল থেকে রেদুয়ানের সঙ্গে তার একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করেছে পুলিশ। তাদের পরিবার থেকেও রেদুয়ানের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়েরের চেষ্টা চলছে।
বিষয়টি নিয়ে রেদুয়ানের বাবা মাসুদ মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে রেদুয়ান পলাতক রয়েছে।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান, চিরকুটটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। মেয়েটির মোবাইল থেকে ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে। তার আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
Comment here