চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে সারা বিশ্ব আছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এই আহ্বান জানান।
সরকার পদত্যাগের একদফা এবং মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানসহ নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একা নই এই আন্দোলনে। আমাদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক বিশ্ব আছে। আসুন আমরা সবাই একযোগে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ি- এই হোক আজকে গণতন্ত্র দিবসে আমাদের শপথ।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতন্ত্র দিবসে আমাদের শপথ হচ্ছে যেকোনো মূল্যে এই সরকারের অধীনে আমরা নির্বাচনে যাব না। কোনো নির্বাচন হবে না নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখনো বলছি, পদত্যাগ করুন, সংসদ ভেঙে দেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন। কেন দিতে চান না? যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়, যদি জনগণ ভোট দিতে যেতে পারে তাহলে তারা (আওয়ামী লীগ) দশটাটা আসনও পাবে না। সেজন্য তারা প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে সাজাচ্ছে।’
বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ এর প্রধান আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিনকে কারাদণ্ড প্রদানের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি আরেকটা কথা বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার নিয়ে যিনি কথা বলতেন, যিনি বিচারবর্হিভূত হত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল সেই হেফাজতে ইসলামীর মিটিংয়ে তার বিরুদ্ধে যিনি কথা বলেছিলেন, তাকে কারাদণ্ড দিয়েছে। আজকে এই সরকার এত ভীত-সন্ত্রস্ত যে তাদেরকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আজকে সারা বিশ্ব এই সরকারের নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে তাদেরকে মুক্ত করতে বলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন তারা রেজুলেশন করেছে যে, অবিলম্বে এই মামলা বাতিল করে তাদের মুক্ত করা হোক এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হোক, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হোক।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেছেন যে, ‘‘আমি এতো ভালো ভালো নির্বাচন করি আর দেশে-বিদেশে প্রশ্ন করে নির্বাচন ভালো হয় না।’’ এটাই হচ্ছে এই বছরের ‘‘টক অব দ্য ইয়ার’’, এটাই হচ্ছে এই বছরের শ্রেষ্ঠ কৌতুক। শেখ হাসিনা নির্বাচন করে ভালো নির্বাচন করে, আওয়ামী লীগ ভালো নির্বাচন করে এ কথা ঘোড়াও বিশ্বাস করে না। ওরা শুনলে হাসে, তাই না? এই হচ্ছে অবস্থা।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, বিএনপি নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।
Comment here