দেশজুড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক। এডিস মশার ভাইরাসবাহী এ জ্বর রাজধানীতে অনেকটা মহামারী আকার ধারণ করেছে। এ নিয়ে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সংস্থাও উদ্বিগ্ন। সবাই আটঘাট বেঁধে নেমেছেন মশা নিধন ও ডেঙ্গু সচেতনতায়।
বাসাবাড়িতে জমে থাকা পানিতে মশার লার্ভার খোঁজে চলছে ভ্রাম্যমাণ আদালতও। তবে এতসব কর্মসূচির যজ্ঞ যাদের হাতে খোদ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কার্যালয় নগর ভবনেই যেন মশার প্রজননস্থল। ময়লা আবর্জনার পাশাপাশি ভবনের কার্নিশ, ছাদসহ ভবন প্রাঙ্গণে জমে রয়েছে স্বচ্ছ পানি। যেখান থেকে বংশবিস্তার ঘটছে ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাসবাহী এডিস মশার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগর ভবন প্রাঙ্গণের কয়েকটি স্থানে সারাবছরই পানি জমে থাকে। ভবনের ঠিক পূর্ব পাশের গেট ঘেঁষেও অনবরত ময়লা পানি বের হচ্ছে বিভিন্ন সরবরাহ লাইন থেকে। দুর্ঘন্ধের কারণে নাক চেপে হাঁটতে হয়। ভবনের বিভিন্ন কার্নিশ ও ছাদেও একই চিত্র। কোথাও পানি জমতে জমতে শেওলা ধরে গেছে। আর এসির পানি তো নিয়মিতই মেঝেতে পড়ছে দেয়াল গড়িয়ে।
প্রথম তলার ব্যাংক ফ্লোর মিলনায়তনের বাইরের অংশের (দক্ষিণ পার্শ্বে) তিনটি স্থানে এসির পানি দেয়াল গড়িয়ে মেঝেতে পড়ছে। পরিষ্কার না করায় স্থানটিতে শেওলাও জমে গেছে। তার উপরেই ভেসে আছে স্বচ্ছ পানি। একই অবস্থা তৃতীয় তলার বাইরের ছোট ছাদে (পশ্চিম পার্শ্বে)। ভবনের বিভিন্ন তলার ব্যবহৃত হাত-মুখ ধোয়ার পানি গড়িয়ে পড়ছে সেখানে। তাই ছাদেও পড়েছে শেওলা। এমনকি ছাদের সেই পানি দেয়াল গড়িয়ে পড়ছে নিচের বাগানে।
এ ছাড়া নগর ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরসংলগ্ন ছাদেও দেখা গেছে একই চিত্র। কোথাও কোথাও বৃষ্টির পানি জমে আছে দীর্ঘদিন ধরে। নানান স্থানে ময়লা আবর্জনা স্তূপ হয়ে থাকলেও পরিষ্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি কখনোই। এসব স্থানে খালি চোখেই দেখা যায় মশার বংশবিস্তার।
ষষ্ঠ তলায় অবস্থিত খাবার হোটেল সংলগ্ন ছাদের অবস্থাও একই। উপরের বিভিন্ন তলা থেকে সেখানে ছুড়ে ফেলা হয় ব্যবহৃত পানি। আবার ছাদে থাকা ট্যাংক ভরার সময়ও অতিরিক্ত পানি কখনো কখনো পড়ে থাকে। ভবনের পিছনের অংশে সর্বত্রই ময়লার স্তূপ। কোথাও কোথাও বিভিন্ন ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ, লোহার আসবাবপত্র ফেলে রাখা। যে কোনো আগন্তুকের কাছেই তা পরিত্যক্ত এলাকা বলে মনে হবে। ডাস্টবিন থাকলেও আশপাশে ময়লা ফেলে নোংরা করে রাখা হয়েছে পরিবেশ। দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করায় ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। অনেক স্থানে দেখা গেছে মশার প্রজননকেন্দ্র। সেখানে বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকাই অসম্ভব।
সার্বিক বিষয়ে ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘আমরা মাঝেমধ্যেই এসব এলাকা পরিষ্কার করি। এর পরও ভবনের বিভিন্ন অংশে জমে থাকা পানি ও মশার প্রজননের বিষয়টি দ্রুতই দেখব।
Comment here