আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সরকারের ভূমিকা কী হবে, তা জানালেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় বাসভবন গণভবনে বেলজিয়াম সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
নির্বাচনকালীন সরকার কেমন হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইন্ডিয়ায় কীভাবে হয়? অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ইংল্যান্ডে? যেভাবে ইলেকশন হয়, ওভাবেই হবে। হ্যাঁ, শুধু আমাদের আরপিও অনুযায়ী যখন ইলেকশনের ডেট ডিক্লেয়ার হবে এবং নমিনেশন সাবমিট হবে তখন থেকে কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা আর মন্ত্রীরা ব্যবহার করতে পারবে না। পতাকা বা কোনো সুবিধা ব্যবহার করতে পারবে না। তখন একজন প্রার্থী হিসেবেই তাদের ভোট চাইতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৮ সালেও সেভাবে হয়েছিল। হ্যাঁ, ১৪-তে (২০১৪ সাল) কিছু মন্ত্রী আমি অন্য দল থেকে নিয়েছিলাম। এরপর ১৮-তে আর সে পদ্ধতিতে করি নাই। অন্যান্য দেশে সেইভাবে, এবারও সেইভাবেই হবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি যেহেতু অসুস্থ, তিনি বাইরে আছেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ আছে, কাজেই ইলেকশন শিডিউল ডিক্লেয়ার হবে। শিডিউল ডিক্লেয়ার হওয়ার পর যে সময়টা দেওয়া হয় সাধারণত নমিনেশন সাবমিট করার, সেটা আগে আমরা দলীয় নেব। তারপর নমিনেশন সাবমিট করার একটা তারিখ দেয়। তারপর প্রত্যাহার করার একটা তারিখ, বাছাই করার একটা সময় নেয় ইলেকশন কমিশন।’
তিনি বলেন, ‘এরপর প্রত্যাহার করার পর, বাছাই করার পর প্রতীক বরাদ্দ হয়। আর প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচারের কাজ। নির্বাচনী প্রচারের সময় কোনো মন্ত্রী কোনো ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন না আর কোনো রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন না, এটাই নিয়ম। কিন্তু সরকার থেমে থাকবে না। সরকারি দৈনন্দিন যে কাজ, যেটাকে রুটিন ওয়ার্ক বলে সেটা কিন্তু করতে হবে। নইলে তো স্থবির হয়ে যাবে, দেশ তো চলবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে, ওই ইলেকশন যখন হবে, যখন এমপিরা নির্বাচিত হবে, নির্বাচিত হওয়ার পর যখন শপথ নেবে এবং এমপিদের সময়টা কিন্তু হিসাব হয় প্রথম পার্লামেন্ট যখন বসে, সেই প্রথম পার্লামেন্ট থেকে কিন্তু এমপিদের যাত্রা শুরু। তাই সেইভাবেই সমস্ত কাজগুলো হবে, সেইভাবেই সবকিছু চলবে। তাই কাজেই এখন আর সেই নির্বাচনকালীন সরকার কে হবে, সেদিকে আর আমরা যাচ্ছি না।’
তিনি বলেন, ‘যেভাবে চলার, অন্যান্য দেশ, আমি এটা ইংল্যান্ডেও আলাপ করেছি, তাদেরও দেখেছি এমনকি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা যে সমস্ত দেশে পার্লামেন্ট সিস্টেম বা ডেমোক্রেসি সিস্টেম বা গণতন্ত্র আছে, যেইভাবে চলে, সেইভাবেই করা হবে। অর্থাৎ নির্বাচনকালীন আমরা যারা থাকব তারাই রুটিন ওয়ার্ক বা দৈনন্দিন কাজকর্ম, যাতে সরকার অচল হয়ে না যায় সেটা আমরা করব। সেইভাবেই চলবে।’
নির্বাচনকালীন সরকারের আকার কেমন হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আকার-বিকার যে রকম হবে তখন দেখা যাবে। ওটা নিয়ে আলাপ না করি। আকার ছোট করলে যেটা সমস্যা হয়, ১৪-তে দেখেছি অনেক মন্ত্রণালয়ের কাজ আর হয় না। কাজগুলো বাধাগ্রস্থ হয়ে যায়, কাজগুলো যাতে বাধাগ্রস্থ না হয়, উন্নয়নের ধারাটা যাতে অব্যাহত থাকে- আমাদের সেটাই প্রচেষ্টা।’
তিনি বলেন, ‘কাজেই আমরা বলছি, যেভাবে আছে ওভাবেই। কারণ সরকারের এত উন্নয়নকাজ, কেউ এসে যেন আবার বাধাগ্রস্থ না করতে পারে তাই যেমন আছে চলমান থাকবে। রুটিন কাজ করবে আর যে প্রার্থী হবে সে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবে না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নিজেও যখন প্রার্থী হব তখন এখানে বসে ভিডিও কনফারেন্সিং করব না। আমি আমার অফিস আলাদা, গতবারও যেমন করেছিলাম। পাঁচ নম্বরে (ধানমন্ডি ৫) একটা অফিসের ব্যবস্থা করেছি।’
Comment here