নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আগামীকাল বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর থেকে মসজিদগুলোতে জামাতে নামাজ ও তারাবি পড়া যাবে। তবে নামাজ পড়ার জন্য স্বাস্থ্যবিধিসহ বেশকিছু শর্তাবলী বেঁধে দিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম ওলামাগণ পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়েছেন। সম্প্রতি সরকার সার্বিক বিবেচনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে মসজিদ বন্ধ ঘোষণার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে।
এ বিষয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আগামীকাল জোহরের নামাজের পর থেকে সারা দেশের মসজিদে মুসল্লিরা নামাজ পড়ার সুযোগ পাবেন। তবে মসজিদে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু শর্তাবলী থাকবে। এসব শর্তাবলীর কথা সারা দেশের মসজিদ পরিচালনা কমিটিকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলেমারদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিম্নবর্ণিত শর্তসাপেক্ষে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন মুসল্লিরা। সেগুলো হলো-
১/ মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সর্ম্পণূ মসজিদ জীবাণূনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে, মুসল্লিগণ প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন;
২/ মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার/ হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং আগত মুসল্লিকে অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে;
৩/ প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওজু করে, সুন্নাত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে;
৪/ কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব অর্থ্যাৎ তিন ফুট পর পর দাঁড়াতে হবে;
৫/ এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে;
৬/ শিশু, বয়োঃবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামায়াতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না;
৭/ সংক্রমণরোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদের ওজুখানায় সাবান/ হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত টুপি ও জায়নামাজ ব্যবহার করা যাবে না;
৮/ সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে;
৯/ মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না;
১০/ উল্লিখিত শর্ত পালন সাপেক্ষে প্রত্যেক মসজিদে সর্বোচ্চ পাঁচজন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ইতেকাফের জন্য অবস্থান করতে পারবেন;
১১/ করোনাভাইরাস মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নামাজ শেষে মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করার জন্য খতিব ও ইমামগণকে অনুরোধ করা যাচ্ছে; এবং
১২/ খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
উল্লিখিত নির্দেশনা লঙ্ঘিত হলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটিকে উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
Comment here