সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে নিহত ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয় স্মরণে মিলাদ মাহফিলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে শহরের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। ধীরে ধীরে তা পুরো এসএস রোডে ছড়িয়ে পড়ে। টানা দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ চলাকালে উভয়গ্রুপে অন্যান্য সংগঠনের নেতাকর্মীরাও যুক্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দফায় দফায় টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। রাত ৮টা পর্যন্তও শহরের দুটি পয়েন্টে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেওয়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মেদ বলেন, ‘জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল লতিফ বিশ্বাসসহ শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নিহত এনামুল হক বিজয়ের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভা চলছিল। এ অবস্থায় ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব খোকা নেতৃত্বে প্রায় দুই শতাধিক লোকজন নিয়ে মিছিল সহকারে স্মরণ সভাস্থলে এসে হামলা চালায়। আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষেও বেঁধে যায়।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় অন্তত ২০/২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবি করেন তিনি।
এই অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা বলেন, ‘প্রায় দেড় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে দোয়া মাহফিলে যোগ দেয়ার জন্য দলীয় কার্যালয়ের সামনে গেলে আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করা হয়। আমরা প্রতিহত করতে গেলে দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। সংঘর্ষে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হকসহ অন্তত ১৫/২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফোরকান শিকদার বলেন, ‘জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত স্মরণ সভা চলাকালে একাংশের নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার সময় তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ক্রমশ তা শহরের মেছুয়া বাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন টহল জোরদার করা হয়েছে। ’
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বিকেলে জাতীয় নেতা প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে ছাত্রলীগ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় এনামুল হক বিজয়কে মাথায় কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে নয় দিন লাইভ সাপোর্টে থাকার পর গত রোববার (৫ জুলাই) সকালে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে ২৭ জুন জেলা ছাত্রলীগের ২ সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংগঠনের ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর গত ২৮ জুন মামলার আসামি জেলা ছাত্রলীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন ও শিহাব আহমেদ জিহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। নিহত এনামুল হক বিজয় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও কামারখন্দ সরকারী হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন।
Comment here