এক সপ্তাহ ধরে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া কাটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় সূর্যের দেখা মিলেছে। মাঘ মাসের ষষ্ঠ দিনে গতকাল শনিবার ঘন কুয়াশা সরে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে বলে জানা গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আভাস দিয়েছে, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, সেটি আরও বিস্তৃত হবে। এই শৈত্যপ্রবাহ আরও দুদিন অব্যাহত থাকবে। সেই সঙ্গে সারাদেশে শীতের অনুভূতিও বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পরে তা আরও বিস্তৃত হবে। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, দিনে কুয়াশা থাকবে। একেবারে যাবে না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়তো কমবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমবে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোনো কোনো এলাকায় তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ১১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চল ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে। সঙ্গে থাকে হিম বাতাস। এর মধ্যে কোথাও কোথাও দুদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও ঝরেছে, যা বাড়িয়ে দিয়েছে শীত। কুয়াশার কারণে সড়ক, নৌ ও আকাশপথে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার খবরও মিলছে।
চলতি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছিল, এ মাসে দেশে এক থেকে দুটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে।
গতকাল দেশে সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে। এদিন দিনাজপুর ও রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ এবং নওগাঁর বদলগাছীতে রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা। সর্বোচ্চ ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজার ও ফেনীতে। ঢাকায় সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে।
দৈনিক আমাদের সময়ের তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি জানান, তৃতীয় দফার শৈত্যপ্রবাহের পর গতকাল শনিবার ১০ ডিগ্রির ওপরে উঠে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা। তবে তাতে শীতের দাপটের কোনো হেরফের হয়নি। এতে খেটে খাওয়া মানুষের কষ্ট বেড়েছে। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় থমকে গেছে তাদের কাজকর্ম। এতে জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শ্রমজীবীরা। তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, গতকাল সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন এ জনপদ। বেলা ১১টার সময় সূর্যের মুখ দেখা যায়। এরপর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।
Comment here