রোজার পরে বাজারে সবজির দাম কমেছিল; কিন্তু হঠাৎ করেই তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় একদিনের ব্যবধানে গতকাল সবজির দাম বেড়ে গেছে প্রায় দ্বিগুণ। বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা ও রসুনও। অন্যদিকে ভরা মৌসুমেও ফলের দামে নেই কোনো স্বস্তি।
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। তবে কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর, মালিবাগ ও খিলগাঁওসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গতকাল প্রতিকেজি করলা বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। একদিন আগেও যা বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। একদিন আগেও ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া কাঁকরোল গতকাল বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। চিচিঙ্গার দামও বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গা বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। ৩০ থেকে ৪০ টাকার কেজির শসা বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে গাজরও।
প্রতিকেজি টমেটো বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। অথচ বৃহস্পতিবারে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছিল টমেটো। প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, আগের দিন যার দাম ছিল ২০ থেকে ৩০ টাকা। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। আগের দিন এর দাম ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বরবটির দামও কেজিতে অন্তত ২০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। দাম বেড়েছে ঝিঙ্গা ও পেঁপেরও।
কারওয়ানবাজারের সবজি বিক্রেতা আউয়াল হোসেন জানান, সরবরাহের তারতম্যের কারণে বাজারে সবজির দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করে। গতকাল আড়তে সব ধরনের সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া শুক্রবার হওয়ার কারণেও দাম কিছুটা চড়া। তবে সার্বিকভাবে রোজার মাসের তুলনায় এখন সবজির দাম কম।
এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের দাম। খুচরাবাজারে আগের মতোই প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। পাইকারিতে পেঁয়াজের পাল্লা (৫ কেজি) ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। তবে ঈদের পরেও লাগাম নেই আদা ও রসুনের দামে। রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা এবং আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে। সরবরাহ কম থাকায় আদা ও রসুনের দাম কমছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ফলের দামেও মিলছে না স্বস্তি। বাজারে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুর মতো মৌসুমি ফলের সরবরাহ বেশি। কিন্তু তার পরও এসব ফলের দাম তেমন কমেনি। কারওয়ানবাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল জাতভেদে প্রতিকেজি আম বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ১০০ টাকায়। জাম বিক্রি করা হয়েছে প্রতিকেজি ১২০ থেকে ১০০ টাকায়। আকারভেদে কাঁঠাল পিসপ্রতি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায়। বড় জাতের আনারসের দামও কিছুটা বেড়ে প্রতি জোড়া বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। চায়না-২ ও ৩ জাতের বড় আকারের ৪০০ লিচু বিক্রি হয়েছে ৪৫০ টাকা দরে। ছোট আকারের ৩০০ লিচু মিলছে ৩৫০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহের চেয়ে প্রতি ১০০টি লিচুতে দাম বেড়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা করে। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে। বাজারে মুরগির দাম কমেছে। তবে আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। গতকাল প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়, যা রোজার মাসে ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। অন্যদিকে এলাকাভেদে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকায়। কোথাও কোথাও আবার বিক্রি হয়েছে ৫৬০ টাকায়। এ ছাড়া আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
 
            

 
                                
Comment here