অর্থ সহায়তার তালিকায় এক মোবাইল নম্বর ২০০ বার ব্যবহারের ঘটনায় তদন্ত শুরু - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সমগ্র বাংলাসিলেট

অর্থ সহায়তার তালিকায় এক মোবাইল নম্বর ২০০ বার ব্যবহারের ঘটনায় তদন্ত শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : হবিগঞ্জে নগদ আড়াই হাজার টাকার সরকারি সহায়তার তালিকায় একই মোবাইল নম্বর ভিন্ন নামে সর্বোচ্চ ২০০ বার ব্যবহারের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লাখাই উপজেলাধীন মুড়িয়াউক ইউনিয়নে প্রস্তুতকৃত প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিকভাবে প্রণীত খসড়া তালিকা যাচাই-বাছাইকালে কতিপয় অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। যে কারণে পুনরায় যথাযথভাবে তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রণীত তালিকা সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারে আপলোড করা হবে, যা আইসিটি ডিভিশন এবং অর্থবিভাগ কর্তৃক ক্রসচেকের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে।

তালিকা প্রণয়নে কোনোরূপ অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি পরিলক্ষিত হয়েছে কি না, এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. নূরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘যাচাই-বাছাইয়ে কতিপয় অসঙ্গতি মিলেছে। এসব বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তালিকাতে বেশকিছু ত্রুটি থাকায় সেগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। একই মোবাইল নম্বরে কোনো অবস্থাতেই একাধিক ব্যক্তিকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা হবে না। কেউ এই অপচেষ্টাটি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শুধু মোবাইল নম্বরই নয়, তালিকাভুক্ত কোনো ব্যক্তি সরকারি অন্য কোনো ভাতাভোগী হলেও বাদ পড়বেন বলে জানান জেলা প্রশাসক।

অনিয়ম নিয়ে গতকাল শনিবার ‘প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তা তালিকায় এক মোবাইল নম্বর ২০০ বার’ শিরোনামে দেশের একটি দৈনিকের অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, লাখাই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ছয় হাজার ৭২০টি পরিবার পাচ্ছে নগদ আড়াই হাজার করে সরকারি অর্থ সহায়তা। এর মধ্যে লাখাই ইউনিয়নে এক হাজার ১৯৪, মোড়াকরি ইউনিয়নে এক হাজার ১১৩, মুড়িয়াউক ইউনিয়নে এক হাজার ১৭৬, বামৈ ইউনিয়নে এক হাজার ২৪৬, করাব ইউনিয়নে এক হাজার ছয় এবং বুল্লা ইউনিয়নের ৯৮৫ পরিবার রয়েছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের নিকট খসড়া তালিকা জমা দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মুড়িয়াউক ইউনিয়নে চারটি মোবাইল নম্বর ব্যবহৃত হয়েছে ৩০৬ জনের নামের সঙ্গে। আর এই নম্বরগুলো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মলাইয়ের ঘনিষ্ঠজনের।

এ ছাড়া তালিকায় যুক্ত হয়েছে অনেক বিত্তশালী ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়-স্বজনের নাম। রয়েছেন স্বামী-স্ত্রীসহ এক পরিবারের একাধিক সদস্যও। একটি ওয়ার্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসবাস না থাকলেও লেখা হয়েছে তাদের নাম। আরও ৩০টি নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ জনের নামে।

মুড়িয়াউক ইউনিয়নের তালিকায় দেখা যায় অন্তত বেশ কয়েকজনের নামের তালিকায় রয়েছে মাত্র একটি নম্বর। ৯৯ জন উপকারভোগীর নামের বিপরীতে রয়েছে ০১৯৪৪-৬০৫১৯৩ মোবাইল নম্বরটি। এ ছাড়া ০১৭৪৪-১৪৯২৩৪ মোবাইল নম্বরটি রয়েছে ৯৭ জনের নামে, ০১৭৮৬-৩৭৪৩৯১ মোবাইল নম্বরটি ৬৫ জনের ও ০১৭৬৬-৩৮০২৮৪ মোবাইল নম্বরটি রয়েছে ৪৫ জন সুবিধাভোগীর নামে।

শুধু মুড়িয়াউকই নয়, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নেই এ ধরনের ভুল হয়েছে এবং সর্বোচ্চ ২০০ বার একটি মোবাইল নম্বর ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, যা ভুলবশত হয়েছে এবং শিগগিরই এগুলো সংরক্ষিত করে হালনাগাদ তালিকা চূড়ান্ত হবে।

Comment here