ইসমাইল হোসেন স্বপন,ইতালি : করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত ইউরোপের দেশ ইতালি। এই ভাইরাসের মহামারি ঠেকাতে নানা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশটিতে জরুরি অবস্থা ‘রেড জোন-ল’ জারি করা হয়েছে। এই আইন অমান্য করায় দেশটির প্রবাসী ৯ বাংলাদেশিকে আটক করেছে পুলিশ। জরিমানাও করা হয়েছে তাদের।
চীনের পর করোনাভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। দেশটিতে প্রতিদিনই হু-হু করে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বিপর্যয় ঠেকাতে ও নাগরিকদের করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে মুক্ত রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপের পাশাপাশি রেড জোন-ল জারি করে সরকার।
ইতালির সব শহরের প্রবেশদ্বারে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এক শহর থেকে অন্য শহরে। মাইকিং করে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে নাগরিকদের। রেড জোন-ল জারি করে আটক ও জরিমানাসহ শাস্তির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
জরিমানা হিসেবে ২০৬ ইউরো ধার্য করা হয়েছে। ৩ মাস থেকে ২১ বছর পর্যন্ত জেল দেওয়ার কথা বলেছে ইতালি সরকার। জরিমানা পূরণ না করলেও একই সময় জেল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে সফরের সুযোগ রয়েছে।
নিজ দেশের নাগরিকদের সঙ্গে প্রবাসীদের জন্যও এই আই চালু রয়েছে। ইতালি সরকারের জারি করা এই আইন অমান্য করায় ৯ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ইতালির নাপোলির সান জুসেপ্পে ভেসুভিয়ানো এলাকা থেকে তাদের আটক করে দেশটির পুলিশ।
স্থানীয় পৌর প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত বাংলাদেশিরা জরুরি প্রয়োজন ও খাদ্যসামগ্রী ক্রয় করতে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন। তবে তারা এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি।
নাপোলি পুলিশ বলছে, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রেড জোন-ল’র আওতায় কোনো ব্যক্তিকে স্ব-প্রশংসাপত্র ও স্ব-বৃত্তান্তসহ নির্দিষ্ট কারণ চিহ্নিত করে বাইরে যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু যারা আটক হয়েছেন তারা কোনো প্রমাণপত্র ও নির্দিষ্ট কারণ দেখাতে পারেননি। এ ছাড়া তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্দেশিত একে অপর থেকে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখেননি।
পুলিশ আরও জানায়, ইতালিয় আইন অনুযায়ী পুলিশ ৬৫০ ধারায় ওই ৯ জনকে আটক করে। একই সঙ্গে সরকারি আইন লঙ্ঘণ করায় জনপ্রতি ২০৬ ইউরো জরিমানা করা হয়েছে। তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, যাচাইয়ে সবাইকে দুই সপ্তাহের জন্য হাসপাতালে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাপোলির মেয়র ভিনসেনজো কাতাপানো সিনডাকো। ফেসবুক পেজে ৯ বাংলাদেশিকে আটকের খবর জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় তাদের প্রতি নিন্দা জানাচ্ছি। আসলে এই মানুষগুলোকে কী বুঝতে পারেনি? তাদের ১৪ দিন কোয়ারেনটাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইতালিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগযোগ করার চেষ্টা করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Comment here