সারাদেশ

একীভূত ব্যাংকের বিষয়ে একগুচ্ছ নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংকের

দেশের ব্যাংকিং খাতকে সুশৃঙ্খল করার অংশ হিসেবে যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান একীভূত হচ্ছে, তাদের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে জারি করা এক গাইডলাইনে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গাইডলাইনে বলা হয়েছে, একীভূত হওয়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং শীর্ষ নির্বাহীরা অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো পদে থাকতে পারবেন না। পারস্পরিক সম্মতি ও জোরপূর্বক একীভূত হওয়া- উভয় প্রতিষ্ঠানের জন্য বিধান রাখা হয়েছে।

এতে বলা হয়, একীভূত প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীদের হিসাব চালিয়ে যাওয়া কিংবা তাদের অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিতে হবে। অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণের তিন বছরের মধ্যে একীভূত প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করতে পারবে না।

গাইডলাইনে বলা হয়, পারস্পরিক সম্মতিতে একীভূত হতে আগ্রহী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ থেকে প্রাথমিক সম্মতি নেওয়ার আগে তাদের পরিচালনা পর্ষদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরে যথাযথ মূল্যায়নের জন্য একীভূত প্রস্তাবের নিরীক্ষার জন্য একজন নিরীক্ষক নিয়োগ দেবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন চাওয়ার আগে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতির জন্য একটি বিশেষ সভা করতে হবে। এ ছাড়া অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানকে পৃথক ইউনিট গঠন করতে হবে বা অধিগ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হবে।

এতে বলা হয়, জোরপূর্বক একীভূতকরণের ক্ষেত্রে দুর্বল ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রক সংস্থা আগ্রহী ক্রেতাদের কাছে দরপত্র চাইবে। তবে দরপত্র প্রক্রিয়া ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠানটিকে অধিগ্রহণের জন্য একটি বা একাধিক ব্যাংককে বলতে পারবে।

গাইডলাইনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবে উপযুক্ত মনে করবে- সেসব আমানতকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের দাবি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। স্বেচ্ছায় একীভূতকরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানকে প্রণোদনা দেবে। কারণ, একীভূতকরণের কারণে ভালো ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও, বিধিবদ্ধ তারল্য অনুপাত, লিকুইডিটি কভারেজ রেশিও এবং নেট স্টেবল ফান্ডিং রেশিও রাখার ক্ষেত্রে অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শিথিল নিয়ম ভোগ করবে।

এতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিদ্যমান সুবিধার আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তারল্য সুবিধা বাড়াবে এবং দীর্ঘমেয়াদি বন্ড কিনে নগদ অর্থ সরবরাহ করবে। অধিগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান মূলধন ভিত্তি সম্প্রসারণে শেয়ার, পারপেচুয়াল বন্ড এবং সাব-অর্ডিনেটেড বন্ড ইস্যু করার জন্য ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে সুবিধা ভোগ করবে। এছাড়াও স্বেচ্ছায় একীভূতকরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আবেদনের পরে সরকার কর্তৃক বিশেষ নীতি সহায়তা বাড়ানো হতে পারে।

Comment here

Facebook Share