এবার কোন কৌশলে ইরান - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
আন্তর্জাতিক

এবার কোন কৌশলে ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের রেভোল্যুশনারি বাহিনীর স্থপতি জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যার বদল হিসেবে গতকাল বুধবার ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে তেহরান। ইরান দাবি করেছে হামলায় উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। যদিও তেহরানের হামলায় ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান প্রত্যক্ষ করা যায়নি। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদের রাডার ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিহত করেছে এবং যেখানে হামলা হয়েছে সেখানে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতি ছিল না। এই ছিল মোটামুটি গতকাল পর্যন্ত দুপক্ষের ভাষ্য।

এখন যে প্রশ্নটি জোরালো হয়ে দেখা দিয়েছে তা হলো- ইরানের প্রতিশোধ কি শেষ? এ প্রশ্নের জবাব একমাত্র বলে দেবে সময়। পরবর্তীকালে ইরানের যে কোনো বড় ধরনের জবাব বা মার্কিন কর্মকর্তাদের ওপর হামলার বিষয়টি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এটি নির্ভর করবে দুদেশের পুক্সক্ষানুপুক্সক্ষ পরিকল্পনা ও সুযোগের ওপর। ইরান দাবি করেছে তারা প্রতিশোধ নিয়েছে। ইরানি সেনাবাহিনী এ হামলা চালিয়েছে। হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে দুদেশের ভাষ্য কিছুটা নমনীয় মনে হয়েছে। উভয় দেশই উত্তেজনা প্রশমনের দিকে যাচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের হামলার জবাবে বলেছেন, তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সব কিছু ভালো আছে। তবে তিনি ইরানকে সব দেশের শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ইরান শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি নয়, তারা সব দেশের জন্যই হুমকি। উভয় দেশের এমন অবস্থান মূলত কিছুটা সময় নেওয়ার কৌশল হতে পারে। চলমান চরম উত্তেজনা আপতত প্রশমনের কৌশলও হতে পারে। কিন্তু উভয় দেশ নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকবে এটি বলা যায়। কেননা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন প্রভাব বিস্তারের জন্য ইরান মারাত্মক কাঁটা। আবার ইরান যেন তাদের এই কঠিন অবস্থান থেকে পিছু হটে এ ব্যাপারে মার্কিন প্রশাসন অনড়। যুক্তরাষ্ট্র চাবে যে কোনো মূল্যে মধ্যপ্রাচ্যে তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে। এমনকি ইরাক থেকে যে মার্কিন সেনা অপসারণের পাঁয়তারা চলছে এটিও তারা হতে দেবে না। মার্কিন কর্মকর্তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনাই নেই।

সোলেইমানি হত্যার পর ইরাকের পার্লামেন্ট দেশ থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের একটি বিল পাস করে। কিন্তু এটা তেমন কাজে দেবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ইরাকের বর্তমান কঠিন রাজনীতিক সমস্যা ইরাক থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে অন্তরায় হবে। কিন্তু অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, কিছুদিন আগের তুলনায় ইরাকে ওয়াশিংটনের অবস্থান কিছুটা হলেও হালকা হয়েছে। ইরান-মার্কিন দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ যে, আগামী দিনগুলোয় মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন তৎপরতা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে। ইরান মূলত এদিকটিতে নজর দেবে।

Comment here