এ কেমন বিচার মহিলা অধিদপ্তরের - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
জাতীয়

এ কেমন বিচার মহিলা অধিদপ্তরের

দিনের পর দিন কাজ করিয়ে নিলেও ৪৩১ জন অস্থায়ী কর্মচারীকে প্রায় পাঁচ মাস ধরে বেতন ভাতা দিচ্ছে না মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের উপজেলা পর্যায়ে নারীদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ (আইজিএ) প্রকল্পে দেশব্যাপী কর্মরত ভুক্তভোগীরা অভিযোগ জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে।

এ নিয়ে উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়েও কোনো লাভ হয়নি। গত ১৩ জানুয়ারি উচ্চ আদালত এক রুল আদেশে ৪৩১ কর্মচারীকে নিজ নিজ কর্মস্থলে বহালসহ তাদের বেতন ভাতা বলবৎ রাখার আদেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কর্ণপাত করেনি অধিদপ্তর।

এদিকে বেতন ভাতা না পাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দরিদ্র এসব কর্মচারীরা। বাধ্য হয়েই তারা গত ১১ জুলাই রাজধানীর ইস্কাটন এলাকায় অবস্থিত মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এতেই ঘটে বিপত্তি। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বেতন ভাতা দূরে থাক, এখন ওই কর্মচারীদের দৈনিক হাজিরাই গ্রহণ করছে না কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে অংশ গ্রহণের কারণে কোনো কোনো কর্মচারীকে নিজ নিজ কার্যালয়ে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না বলে গতকাল শুক্রবার আমাদের সময়র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

গত ৮ জুলাই মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আফরোজা বেগম এক অফিস আদেশে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদালতের নির্দেশনা মেনে এই বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাও বাস্তবায়ন করেনি অধিদপ্তর। উল্টো ওই কর্মচারীদের হাজিরা গ্রহণ না করার জন্য উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তা ভর করেছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ৪৩১ জন অস্থায়ী কর্মচারীর জীবনে। ভবিৎষতের চিন্তায় চোখে অন্ধকার দেখছেন তারা।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে জনবল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক (আদালতে রিট পিটিশনকারী) এ বি এস খান স্বপন আমাদের সময়কে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অধীনস্থ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ প্রকল্পে গত বছরের ১ মার্চ থেকে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছে ৪৩১ জন নারী-পুরুষ। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ থেকে তাদের বেতন ভাতা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রতিদিনই কাজ করিয়ে নিচ্ছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এই বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেছি। আদালত ভুক্তভোগী কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানের রায় দিয়েছেন।’

এ বি এস খান স্বপন আরও বলেন, ‘মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এই রায়ের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই আপিল খারিজ করে উচ্চ আদালতের রায় বলবৎ রেখেছেন আদালত। কিন্তু কোনো আদালতের রায়-ই কর্ণপাত করছেন না মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। উল্টো কর্মচারীদের এখন হাজিরা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠান থেকে বের করেও দেওয়া হয়েছে কয়েকজনকে। উচ্চ আদালত মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কাছে কর্মচারীদের হাজিরা খাতা তলব করার পরই এই ঘটনা ঘটাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।’

অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের প্রকল্প (আইজিএ) পরিচালক শফিকুজ্জামান আমাদের সময়কে বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ (আইজিএ) প্রকল্পের ৪৩১ জন অস্থায়ী কর্মচারীরা বেতন ভাতা পাচ্ছেন না অভিযোগটি সঠিক নয়। এই বিষয়ে আদালতে মামলা করেছেন একটি প্রতিষ্ঠান। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এই সমস্যার সমাধান করা হবে।

Comment here