ওই কুলাঙ্গারকে ধরে এনে বিচার করব: প্রধানমন্ত্রী - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

ওই কুলাঙ্গারকে ধরে এনে বিচার করব: প্রধানমন্ত্রী

শ্রমিকদের অসন্তোষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারা তাদের (শ্রমিকদের) উস্কানি দিচ্ছে সেটা আমরা জানি। যারা এরমধ্যে ভাঙচুরে জড়িত, (বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে) যারা হুকুমদাতা, দেশেই থাকুক আর বিদেশেই থাকুক।তাদেরকে আমরা বিচারের আওতায় নিয়ে আসব।

তিনি বলেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করেছি আর সেই সুবিধা নিয়ে বিদেশে বসে হুকুমদারি করে, বিদেশ থেকে ধরে দেশে এনে ওই কুলাঙ্গারকে (তারেক রহমান) শাস্তি দিব ইনশাআল্লাহ।

আগারগাঁও-মতিঝিল মেট্রোরেলের উদ্বোধন ঘোষণা উপলক্ষ্যে আজ শনিবার আরামবাগে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

শ্রমিকদের উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যের কথায় নেচে কারখানা হামলা করে, ভাঙচুর করে দেশের ক্ষতি করলে নিজেরই ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে ওই গ্রামেই ফিরে যেতে হবে। সেখানে বিনাকাজে জীবনযাপন করতে হবে- এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যে কারখানা আপনাদের রুটিরুজি দেয়, যে কারখানায় সময় দিয়ে আপনারা টাকাপয়সা কামায় করেন, সেই কারখানা ভাঙচুর করলে আল্লাহও নারাজ হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের যা প্রয়োজন হয়, অসুবিধা হয় আমরা দেখি। আপনাদের কার্ডের ব্যবস্থা করে দিয়েছি, সেই কার্ড নিয়ে আপনারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারেন। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে আপনাদের গ্যাস সেন্টার, চিকিৎসা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ছুটি, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা আমি করে দিয়েছি। আপনাদের জন্য যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে।

তিনি বলেন, আজ গার্মেন্টসে শ্রমিক অসন্তোষ হয়েছে, উস্কানি দিয়েছে তারা (বিএনপি)। অথচ শুরুতে বিএনপির আমলে শ্রমিকদের মজুরি ছিল মাত্র ৫০০ টাকা। আমি ৯৬ সালে যখন ক্ষমতায় আসি তখন ছিল মাত্র ৮০০ টাকা মজুরি। আমি সরকারে এসে তাদের মজুরি ১৬০০ টাকা করেছিলাম। এরপর বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল, কই তারা তো এক পয়সাও বাড়ায়নি তাদের মজুরি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে আবার গার্মেন্টসে শ্রমিকদের মজুরি ৩২০০ টাকা বাড়ায়। পাশাপাশি সকল শ্রমিকদের মজুরি আমরা বাড়িয়ে দিয়েছি।

সরকারপ্রধান বলেন, দ্বিতীয়বারে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করি। তৃতীয়বারে ৮ হাজার ৩০০ টাকা করি। আওয়ামী লীগ পর পর তিনবার ক্ষমতায়, এই তিনবার ১৬০০ টাকা থেকে ৮ হাজার ৩০০ টাকায় উন্নীত করেছি।

শ্রমিকদের উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অন্যের কথায় নেচে কারখানা হামলা করে, ভাঙচুর করে দেশের ক্ষতি করলে নিজেরই ক্ষতি হবে। আর কারখানা বন্ধ করলে ওই গ্রামেই ফিরে যেতে হবে। সেখানে বিনাকাজে জীবনযাপন করতে হবে- এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।

আগুন সন্ত্রাসের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এভাবে আগুন দিয়ে পোড়াবে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। দরকার হলে তাদের ধরে ওই আগুনের মধ্যে ফেলতে হবে। যেই হাত দিয়ে তারা আগুন দিবে সেই হাত আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিতে হবে। তবেই তাদের শিক্ষা হবে।

যারা বাসে আগুন দেয়, গাড়িতে আগুন দেয়, তারা বাসে চড়ে না এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের গাড়ি নাই, তাদের জিনিসপত্র নাই, জনগণ যদি সেগুলো পোড়াতে শুরু করে তাহলে তারা কোথায় যাবে। তখন তারা কী করবে সেটাও তাদের চিন্তা করা উচিত। আমরা এখনো ধৈর্য ধরে আছি।

সরকারপ্রধান বলেন, তারা তো অনেকদিন ক্ষমতায় ছিল। সে সময় পানি ছিল না, বিদ্যুৎ ছিল না, খাবার ছিল না, চিকিৎসা ছিল না, থাকার জায়গা ছিল না, একেবারে মানবেতর জীবনযাপন ছিল। আর গ্রামে গ্রামে ছিল হাহাকার।

গত ২৮ অক্টোবরের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কোনো মানুষ যার ভিতরে এতটুকু মনুষত্ব আছে তারা কি এভাবে পুলিশকে মারতে পারে? পুলিশ কী দোষটা করেছে?

এ সময় পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সেদিন যথেষ্ট সহনশীলতা দেখিয়েছে। অথচ ওই পুলিশের ওপর তারা আক্রমণ করেছে। পুলিশ পেছনে হটে গেছে, তারপরেও এক পুলিশকে ধরে যেভাবে তাকে লাঠিপেটা করেছে, হেলমেট খুলে ফেলে দিয়ে তারা মাথায় কুপিয়েছে।

তিনি বলেন, পুলিশের হাসপাতাল রাজারবাগ ঢুকে অ্যাম্বুলেন্স পুড়িয়ে সেখানে তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। আনসারের ওপর হামলা করেছে। আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বিশেষ করে মহিলাদের নির্যাতন করেছে। বিএনপির সন্ত্রাসীরা রাস্তায় ফেলে মেয়েদের অত্যাচার করেছে। আমি ধিক্কার জানাই এটা কি রাজনীতি?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা দেওয়ার মালিক আল্লাহ। আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি। জনগণের সমর্থনে আস্থা রাখি। খালেদা জিয়া তো বলেছিলেন, একশ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। আজকে সে কথায়ই আটকে গেছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ চার বার ক্ষমতায়। আবারও মানুষের সমর্থন নিয়ে আমরা ক্ষমতায় আসব। আর বিএনপি গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

Comment here